নিকুঞ্জের সামনে ট্রাক উল্টে এয়ারপোর্ট রোডে দীর্ঘ যানজট

নিকুঞ্জের সামনে ট্রাক উল্টে এয়ারপোর্ট রোডে দীর্ঘ যানজট

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকার সামনে একটি মালবাহী ট্রাক উল্টে যাওয়ার ঘটনায় এয়ারপোর্ট রোডে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ঘটনার কারণে সড়কের একটি লেনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় সকালবেলার ব্যস্ত সময়ে অফিসগামী, স্কুলগামী ও সাধারণ যাত্রীদের চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ট্রাফিক পুলিশ দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে এবং প্রায় আধা ঘণ্টার প্রচেষ্টায় ট্রাকটি সরানো সম্ভব হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান ট্রাফিক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সকাল ৮টা ৫৩ মিনিটের দিকে নিকুঞ্জ-১ এলাকার আউটগোয়িং সড়কে একটি লোডেড ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। দুর্ঘটনার পরপরই ওই অংশে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হতে শুরু করে। এয়ারপোর্ট রোডের গুরুত্বপূর্ণ এই অংশটি রাজধানীর উত্তরের সঙ্গে কেন্দ্রীয় এলাকার সংযোগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যেই যানজট ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের সড়কগুলোতে।

ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুর্ঘটনার পর দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করা হয় এবং সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উল্টে যাওয়া ট্রাকটি সড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক করতে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা সিগন্যাল ব্যবস্থাপনা ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। তবে ট্রাক সরানো হলেও জমে থাকা যানজট পুরোপুরি নিরসনে কিছুটা সময় লাগে।

সকালের এই দুর্ঘটনার প্রভাবে এয়ারপোর্ট রোডে যানজট একদিকে বনানী পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। বনানী কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের সংযোগ সড়কগুলোতেও ধীরগতির যান চলাচল লক্ষ্য করা যায়। অন্যদিকে, বিকল্প সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত মাটিকাটা ফ্লাইওভার হয়ে যানজট ছড়িয়ে পড়ে মিরপুরের কালশী এলাকা পর্যন্ত। ফলে উত্তরা, কুড়িল, বনানী ও মিরপুরগামী যাত্রীরা দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকেন।

প্রতিদিনের মতো সকালবেলায় অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার চাপ থাকায় দুর্ঘটনার প্রভাব আরও তীব্র হয়। বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল ও গণপরিবহনের যাত্রীরা নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে বিড়ম্বনার শিকার হন। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের পাশাপাশি জরুরি কাজে বের হওয়া যাত্রীদের জন্য পরিস্থিতি বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।

ট্রাফিক সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে তার প্রভাব দ্রুত আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এয়ারপোর্ট রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ করিডরে একটি লেন বন্ধ হয়ে গেলেই পুরো ব্যবস্থাপনায় চাপ সৃষ্টি হয়। এছাড়া ভারী যানবাহনের চলাচল ও ব্যস্ত সময়ের সমন্বয় না থাকলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও যানজট আরও বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নগরীতে যানজট কমাতে দ্রুত দুর্ঘটনা অপসারণ ব্যবস্থা আরও জোরদার করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ভারী ও মালবাহী যানবাহনের চলাচলের সময় ও রুট ব্যবস্থাপনায় কঠোর নজরদারি থাকলে এ ধরনের পরিস্থিতি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। নিয়মিত রোড সেফটি অডিট, চালকদের প্রশিক্ষণ এবং জরুরি উদ্ধার সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হলে দুর্ঘটনার পর সড়ক দ্রুত সচল করা যায়।

এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে সাময়িক এই দুর্ঘটনাই রাজধানীর যানজট পরিস্থিতির নাজুক চিত্র আবারও তুলে ধরেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ট্রাফিক বিভাগ ও উদ্ধারকারী সংস্থাগুলোর সমন্বয় আরও জোরদার করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

রাজধানী শীর্ষ সংবাদ