আইন আদালত ডেস্ক
ঢাকা: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের বাবা হুমায়ুন কবির ও মা হাসি বেগম বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুল ইসলামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেছেন যে, ফয়সালের সকল অপকর্ম সম্পর্কে তারা অবগত ছিলেন। হাদিকে গুলি করার ঘটনায় ফয়সাল ও তার সহযোগী পালানোর সময় তাদের সহায়তা করেন এবং ব্যবহৃত অস্ত্র লুকানোর কাজে সহযোগিতা প্রদান করেন। আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ডের পর কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ফয়সালের বাবা-মা জানিয়ে দিয়েছেন, ঘটনার দিন ফয়সাল সকাল থেকে কোনো মোবাইল ফোন ব্যবহার করেনি। সে আগের রাত থেকেই হাদির পরবর্তী দিনের কর্মসূচি সম্পর্কে জানতেন। ঘটনার দিন ফয়সাল হাদিকে গুলি করার পর শেরেবাংলা নগরের তার বোনের বাসায় যান, যেখানে তার বাবা-মা ও বোন অবস্থান করছিলেন। সেখানে তিনি তিনটি অস্ত্র তার বাবার কাছে দিয়েছেন। এরপর মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেট পরিবর্তন করা হয় এবং ফয়সাল বাসা থেকে বের হয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাত্রা করেন, যার সকল ব্যবস্থা তার বাবা করেছেন। বের হওয়ার সময় ফয়সাল জানিয়েছিলেন, তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করতে যাচ্ছেন।
জবানবন্দিতে আরও বলা হয়েছে, ফয়সাল তিনটি বিয়ে করেছেন এবং তার একজন বান্ধবী রয়েছে। তিনি ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নকালে রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং পরবর্তীতে বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
ফয়সাল মাদক গ্রহণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, যা তার বাবা-মা জানতেন। তবে তারা জানিয়েছেন, পরিবারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল না। সাধারণত ফয়সাল অন্যত্র অবস্থান করত, আর বাবা-মা মেয়ের বাসায় থাকতেন।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ফয়সাল এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্ত এবং বিচারের প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছে। মামলার প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, ফয়সালের পরিকল্পিত কর্মকাণ্ড এবং পরিবারের সহায়তা তাকে অপরাধ সংঘটনের জন্য সহায়ক পরিবেশ প্রদান করেছিল। এই ঘটনায় দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর নজরদারি আরও কঠোর করার প্রস্তাব রয়েছে।


