জাতীয় ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে সিন্ডিকেটের জরুরি অনলাইন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সাইফুদ্দীন আহমদ জানান, ওসমান হাদির পরিবারের অনুরোধ এবং সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের পাঠানো চিঠির প্রেক্ষিতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রক্টর জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশেই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সমাহিত আছেন এবং ওই চত্বরে আরও কয়েকজন শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীর কবর রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ওসমান হাদির দাফনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, সে বিষয়েও সিন্ডিকেটের জরুরি বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ওসমান হাদি গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে দাফন দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে ওসমান হাদির সংযোগকেও প্রকাশ করছে। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে, যাতে দাফন অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, দাফন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের প্রবেশাধিকার এবং অনুষ্ঠান সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম প্রশাসনিক তদারকিতে পরিচালিত হবে। পাশাপাশি, নিরাপত্তা ও জনসচেতনতার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রাখা হবে।
ওসমান হাদির মৃত্যু ও তার দাফন দেশের রাজনৈতিক পরিসরে নানা প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তাঁর দাফন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
এদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দাফন অনুষ্ঠান চলাকালীন সব নিরাপত্তা প্রটোকল কঠোরভাবে পালন করা হবে এবং জনজট এড়াতে প্রয়োজনীয় যানজট নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
শরীফ ওসমান হাদির জীবন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দেশের রাজনীতি ও ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। তাঁর দাফন এই ইতিহাসের সঙ্গে আরও একটি সংযোজন হিসেবে চিহ্নিত হবে।


