নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের আকাশে চলতি হিজরি ১৪৪৭ সনের পবিত্র রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে। এর ফলে আগামীকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থেকে সারাদেশে পবিত্র রজব মাস গণনা শুরু হবে। সেই অনুযায়ী আগামী ১৬ জানুয়ারি (শুক্রবার) দিনগত রাতে পবিত্র শবেমেরাজ পালিত হবে।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় পর্যায়ের চাঁদ দেখা সংক্রান্ত সভা শেষে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। সভায় প্রাপ্ত তথ্য ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রজব মাসের সূচনার ঘোষণা দেন।
সভায় ধর্ম উপদেষ্টা জানান, দেশের বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত নির্ভরযোগ্য তথ্য বিশ্লেষণ করে রজব মাসের চাঁদ দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনসমূহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয় এবং বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, আবহাওয়া অধিদফতর, মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয় যে, রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে। এর ফলে সোমবার থেকে হিজরি ১৪৪৭ সনের রজব মাস শুরু হবে।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও জানান, চাঁদ দেখা যাওয়ার তারিখ অনুযায়ী আগামী ১৬ জানুয়ারি (শুক্রবার) দিনগত রাতে সারাদেশে পবিত্র শবেমেরাজ পালিত হবে। এ উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে রজব মাস বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এই মাসকে পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ মাস হিসেবে গণ্য করা হয়। ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় বর্ণনা অনুযায়ী, এই মাসেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মেরাজের ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। শবেমেরাজ উপলক্ষে মুসলমানরা বিশেষ ইবাদত-বন্দেগি, নফল নামাজ, দোয়া ও জিকিরের মাধ্যমে রাতটি পালন করে থাকেন। অনেক এলাকায় ধর্মীয় আলোচনা সভা, মাহফিল ও বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
চাঁদ দেখা সংক্রান্ত সভায় উপস্থিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, হিজরি মাস নির্ধারণে দেশে প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ করে বিভিন্ন পর্যায়ের তথ্য সমন্বয় করা হয়েছে। আকাশ পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণও বিবেচনায় নেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ধর্মীয় দিবসসমূহের সঠিক তারিখ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে, যাতে সারাদেশে একযোগে ধর্মীয় আচার পালন নিশ্চিত করা যায়।
সভায় ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামাল উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব মো. ফজলুর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খানসহ চাঁদ দেখা কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তারা সভায় চাঁদ দেখার তথ্য যাচাই-বাছাই ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নেন।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শবেমেরাজ উপলক্ষে দেশের মসজিদগুলোতে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হতে পারে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রজব মাসের সূচনা ও শবেমেরাজের তারিখ নির্ধারণের ঘোষণার মাধ্যমে ধর্মীয় কার্যক্রমের প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ সম্পন্ন হলো। নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী মুসলমানরা পবিত্র এই মাস ও শবেমেরাজের রাতকে কেন্দ্র করে ইবাদত ও ধর্মীয় অনুশীলনে অংশ নেবেন।


