নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহিদ শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন ঢাকা-৬ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
লিড অনুচ্ছেদে ইশরাক হোসেন হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেন, এই ঘটনার বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব এবং এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি দাবি করেন, হাদি হত্যাকাণ্ডের পর দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতায় এর প্রভাব পড়বে এবং ভবিষ্যৎ পথচলায় গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করবে।
হত্যাকাণ্ডের পরদিন শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে শহিদ শরীফ ওসমান হাদির দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ, ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মী এবং পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বিপুলসংখ্যক মানুষ জানাজায় শরিক হন।
জানাজা ও দাফন শেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং দ্রুত তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার দাবি ওঠে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার পরপরই তদন্ত শুরু হয়েছে এবং সন্দেহভাজনদের শনাক্তে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
ইশরাক হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে রাষ্ট্রকে সক্রিয় হতে হবে। তিনি আরও বলেন, অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে এবং দেশ-বিদেশে যেখানেই তারা অবস্থান করুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ থাকবে।
তিনি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সহিংস রাজনীতির প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে এবং এ ধরনের ঘটনাগুলো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। তার মতে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও সহিংসতার কোনো স্থান নেই এবং এসব অপরাধের নিরপেক্ষ বিচার হওয়া জরুরি।
হাদি হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন দলের নেতারা এটিকে একটি গুরুতর অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে দ্রুত বিচার সম্পন্নের আহ্বান জানিয়েছেন। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জোরদারের দাবি তুলেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার রাজনৈতিক সহিংসতা প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হতে পারে। তারা বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনা না গেলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে ঘটনার বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রযুক্তিগত ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে সন্দেহভাজনদের শনাক্তে কাজ চলছে। তদন্ত শেষ হলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া ও এর অগ্রগতি এখন রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিসরে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, দ্রুত ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।


