অর্থনীতি ডেস্ক
বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার (২২ ডিসেম্বর) প্রজ্ঞাপন জারি করে একীভূত হওয়া পাঁচটি ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ারমূল্য শূন্য ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর ওপর তাদের বর্তমান মালিকদের আনুষ্ঠানিক কর্তৃত্ব শেষ হয়ে গেছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর অ্যাসেট ও লাইবিলিটি হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় আর কোনো বাধা থাকছে না।
প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য অনুযায়ী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের মধ্যে এই হস্তান্তর প্রক্রিয়া শিগগিরই চুক্তির মাধ্যমে চূড়ান্ত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এরইমধ্যে এই প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বেশ কিছু প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
পুঁজিবাজারে আগে জানানো হয়েছিল, গত ৫ নভেম্বর সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের যাত্রা শুরু হওয়ার পর ওই পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারগুলোর শূন্যকরণের প্রক্রিয়া কার্যকর হবে। তবে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধাপটি ব্যাংকগুলোর পুনরায় গঠন ও আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শেয়ারহোল্ডারদের ওপর মালিকানা হ্রাস এবং অ্যাসেট-লাইবিলিটি হস্তান্তরের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে একক, সমন্বিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।
এখন যে পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করা হয়েছে, সেগুলো হলো: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে এ হস্তান্তরের মাধ্যমে এই ব্যাংকগুলোর সমস্ত সম্পদ, দায় এবং লেনদেনের দায়িত্ব নতুন একক প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে মালিকদের কর্তৃত্ব হ্রাস এবং অ্যাসেট-লাইবিলিটি হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় আগামী দিনগুলোতে ব্যাংকগুলোর পরিচালনায় পরিবর্তন আসতে পারে। ব্যাংকগুলোর একীকরণের ফলে ঋণ পুনঃগঠন, সুদের হার এবং আর্থিক নীতিতে কিছু পরিবর্তন দেখা যেতে পারে, যা ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণ ও অ্যাসেট হস্তান্তরের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের স্বচ্ছতা এবং কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভবিষ্যতে ব্যাংকগুলোর পরিচালনায় কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আর্থিক ঝুঁকি কমানোর সুযোগ তৈরি হবে।
এছাড়া, একীকরণের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা খরচ হ্রাস এবং সম্পদের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের অধীনে এই পাঁচ ব্যাংকের সম্পদ-দায়িত্বের পুনর্বিন্যাস দেশের আর্থিক ব্যবস্থাকে আরও স্থিতিশীল করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।


