জেলা প্রতিনিধি
খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক মোতালেব শিকদারকে সোমবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে দুর্বৃত্তরা গুলি করেছে। হামলার সময় তার মাথা লক্ষ্য করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং চিকিৎসকরা তার অবস্থাকে আশঙ্কাজনক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) অনিমেষ মন্ডল উপস্থিত জনতার সহায়তায় আহত মোতালেব শিকদারকে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তার মাথার সিটি স্ক্যানের জন্য তাকে শেখপাড়া সিটি ইমেজিং সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। তবে হামলার সুনির্দিষ্ট স্থান এখনও চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মোতালেব শিকদারকে লক্ষ্য করে একাধিক গুলি ছোড়া হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, খুলনা বিভাগীয় প্রধান ও শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠককে লক্ষ্য করে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক সহিংসতা পুনরায় দেখা দিচ্ছে। এর আগে, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে এনসিপির নেতা শরিফ ওসমান হাদিকে মাথায় গুলি করা হয়েছিল। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানেই ১৮ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
খুলনা ঘটনার পর স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলি এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে এবং হামলাকারীদের গ্রেফতারের জন্য তদন্ত শুরু করেছে। বিশেষভাবে রাজনৈতিক নেতাদের নিরাপত্তা আরও কঠোর করার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারিতে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক সহিংসতা স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাপত্তা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশে উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে পারে। এই ধরনের ঘটনায় দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করা এবং দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনা তদন্তের অংশ হিসেবে তারা সিসিটিভি ফুটেজ, প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা ও স্থানীয় সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, তবে মোতালেব শিকদারের শারীরিক অবস্থা এখনও গুরুতর।


