ইনজুরি টাইমের গোলে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে আফ্রিকা নেশন্স কাপ শুরু মিশরের

ইনজুরি টাইমের গোলে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে আফ্রিকা নেশন্স কাপ শুরু মিশরের

খেলাধুলা ডেস্ক

আফ্রিকা নেশন্স কাপের ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ২-১ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে সাতবারের চ্যাম্পিয়ন মিশর। সোমবার মরক্কোর আগাদিরে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ইনজুরি টাইমে মোহাম্মদ সালাহর করা জয়সূচক গোলে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করে উত্তর আফ্রিকার দেশটি।

ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে মিশর। বল দখল ও আক্রমণের সংখ্যায় স্পষ্টভাবে এগিয়ে থাকলেও প্রথমার্ধে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি দলটি। উল্টো ২০তম মিনিটে জিম্বাবুয়ের প্রিন্স ডুবে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। আগাদির স্টেডিয়ামে এ গোলের পর কিছুটা চাপে পড়ে যায় মিশর। তবে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে সমতা ফেরানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে তারা।

প্রথমার্ধে একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও মিশরের ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থ ফিনিশিংয়ের কারণে ব্যবধান ঘোচানো সম্ভব হয়নি। এ সময় জিম্বাবুয়ের গোলরক্ষক ওয়াশিংটন আরুবি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পুরো ম্যাচে তিনি মোট নয়টি সেভ করেন, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি ছিল নিশ্চিত গোল রুখে দেওয়ার মতো। প্রথমার্ধ শেষে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় জিম্বাবুয়ে।

দ্বিতীয়ার্ধে মিশর আক্রমণের গতি আরও বাড়ায়। উইং ও মাঝমাঠ ব্যবহার করে একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকে তারা। ৬৩তম মিনিটে সেই চাপের ফল পায় দলটি। ম্যানচেস্টার সিটির ফরোয়ার্ড ওমর মারমৌশ বক্সের বাইরে থেকে উঁচু শটে জিম্বাবুয়ের জাল কাঁপিয়ে সমতা ফেরান। গোলের পর মিশর আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে এবং জয়সূচক গোলের সন্ধানে একের পর এক সুযোগ তৈরি করতে থাকে।

ম্যাচের শেষ ভাগে উভয় দলই পাল্টাপাল্টি আক্রমণ চালালেও মূলত মিশরই বল দখলে রেখে খেলা নিয়ন্ত্রণ করে। নির্ধারিত সময়ের পর যোগ করা সময়ে এসে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। ৯১তম মিনিটে বক্সের ভেতরে সতীর্থের হেড থেকে আসা আলগা বল পেয়ে বাঁ পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন মোহাম্মদ সালাহ। জিম্বাবুয়ের ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জ ও গোলরক্ষক আরুবির ঝাঁপ সত্ত্বেও বল জালে চলে যায়। এটি ছিল ম্যাচে মিশরের ৩৫তম শট।

এই গোলের মাধ্যমে ম্যাচে প্রথমবারের মতো এগিয়ে যায় মিশর এবং শেষ পর্যন্ত সেই ব্যবধানই ধরে রেখে জয় নিশ্চিত করে। দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলের অন্যতম ভরসা সালাহ এ ম্যাচে আক্রমণভাগে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তিনি একাধিকবার সতীর্থদের জন্য গোলের সুযোগ তৈরি করেন এবং শেষ পর্যন্ত নিজেই দলের জয়ের দায়িত্ব নেন।

এই ম্যাচে ৩৩ বছর বয়সী সালাহ টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে শুরুর একাদশে ছিলেন। ক্লাব ফুটবলে সাম্প্রতিক সময়ের অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও জাতীয় দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে কার্যকর ভূমিকা রাখার সক্ষমতা আবারও প্রমাণ করেন তিনি। মিশরের আক্রমণভাগে সালাহ ও মারমৌশের সমন্বয় আগামী ম্যাচগুলোতে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

আফ্রিকা নেশন্স কাপে মিশর সবচেয়ে সফল দল হলেও সালাহ এখনো এই শিরোপা জিততে পারেননি। ২০১৭ ও ২০২২ সালে ফাইনালে উঠেও রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল দলকে। এবারের আসরে মিশর তাদের অষ্টম শিরোপা এবং সালাহর প্রথম ট্রফি জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে।

‘বি’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ২-১ গোলে অ্যাঙ্গোলাকে হারিয়েছে। প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়ায় গ্রুপ পর্বে মিশরের অবস্থান শক্ত হলো। পরবর্তী ম্যাচগুলোতে এই জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখাই এখন দলটির প্রধান লক্ষ্য।

খেলাধূলা শীর্ষ সংবাদ