শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার নেপথ্যে সুপরিকল্পিত ‘শুটার টিম’

শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার নেপথ্যে সুপরিকল্পিত ‘শুটার টিম’

আইন আদালত ডেস্ক

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি ১২ ডিসেম্বর শুক্রবার দুপুরে হত্যার শিকার হন। গোয়েন্দা তদন্তে দেখা গেছে, এই হত্যা ছিল পরিকল্পিত, যেখানে বিদেশ থেকে ফিরে গঠিত ‘শুটার টিম’ দ্বারা ঘটনা বাস্তবায়িত হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, হত্যার মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ। তিনি হাদির সঙ্গে পরিচয় গড়ে তুলে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। শুটার ফয়সাল ৪ ডিসেম্বর বাংলামোটরের ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে হাদির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনী প্রচারে একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেন। এর পর ৯ ও ১০ ডিসেম্বর হাদির প্রচারণায় সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে গোপনভাবে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন।

গোয়েন্দা তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, ১১ ডিসেম্বর পশ্চিম আগারগাঁওয়ে ফয়সাল তার বান্ধবী ও তার বোনের সঙ্গে হত্যার প্রস্তুতি নেন। ১২ ডিসেম্বর ভোর ৫টা ২২ মিনিটে ফয়সাল ও আলমগীর হেমায়েতপুরের গ্রিন জোন রিসোর্টে প্রবেশ করেন এবং হত্যা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন।

হত্যা সম্পাদনের দিন, সকাল থেকে ফয়সাল ও আলমগীর হাদিকে অনুসরণ করে। দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে হাদি মতিঝিলের জামিয়া দারুল উলুম মসজিদের সামনে পৌঁছালে আলমগীর মোটরসাইকেল পার্ক করেন। দুপুর ২টা ১৬ মিনিটে হাদি সেখান থেকে রওনা দিলে শুটার তাকে পেছন থেকে অনুসরণ করে। ২টা ২৪ মিনিটে ফয়সাল খুব কাছ থেকে হাদিকে লক্ষ্য করে দুটি গুলি ছুঁড়ে হত্যা কার্য সম্পন্ন করেন।

তদন্তে উঠে এসেছে, হত্যাকাণ্ডের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই মূল অভিযুক্ত ফয়সাল দেশ ছাড়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ আলামতও পরিকল্পিতভাবে মুছে ফেলা হয়। গোয়েন্দারা ধারণা করছেন, হত্যার উদ্দেশ্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং আলোড়ন সৃষ্টি করা ছিল। হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং নির্বাচনী পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে।

শরিফ ওসমান হাদির হত্যার ঘটনা গোয়েন্দা তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত করছে, এটি কোনো আকস্মিক ঘটনার ফল নয়, বরং সুপরিকল্পিত মিশনের অংশ। হত্যাকাণ্ডের ধারা ও পরিকল্পনার বিশদ বিশ্লেষণ দেশের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

আইন আদালত শীর্ষ সংবাদ