জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
কোরআন মুসলিমদের জন্য শুধু ধর্মীয় গ্রন্থ নয়; এটি দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ ও মর্যাদা বৃদ্ধির উৎস। ইসলামের পবিত্র এই গ্রন্থের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব। বিশেষ করে কোরআনের নিয়মিত পাঠ, তাজবিদ শিখে সুন্দরভাবে তিলাওয়াত, তাফসির জানা এবং নাজিল হওয়ার প্রেক্ষাপট বোঝার চেষ্টা একটি মুসলমানের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কোরআন কিয়ামতের দিন মানুষের পক্ষে বা বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবে। অর্থাৎ, যিনি কোরআনকে সামনে রাখবেন, আল্লাহ তাঁকে জান্নাতের পথে পরিচালনা করবেন; আর যারা তা অবহেলা করবেন, তাঁরা বিপদে পড়বেন। তাবারানির এক হাদিসে বলা হয়েছে, কোরআন সুপারিশকারী। যার জন্য সুপারিশ করা হয়, তার সুপারিশ গ্রহণযোগ্য হবে।
দুনিয়াতেও কোরআন মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি করে। সহিহ মুসলিমে বর্ণিত এক ঘটনায় দেখা যায়, খলিফা ওমর (রা.) মক্কার শাসক হিসেবে একজন মুক্তদাসকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। আপত্তি উঠলে তিনি উল্লেখ করেন, ওই ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের পাঠক এবং দ্বীনের বিধান সম্পর্কে জ্ঞানী। এ ঘটনায় প্রকাশ পায়, আল্লাহ কিতাবের মাধ্যমে কিছু লোককে উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেন।
হজরত উসমান (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, উত্তম ব্যক্তি হলো যিনি নিজে কোরআন শেখেন এবং অন্যকে শেখান। এছাড়া হাদিসে উল্লেখ আছে, কোরআনের সঙ্গীকে বলা হবে, “পড়ো এবং জান্নাতের স্তরে উপরে ওঠো। তোমার স্থান হবে শেষ যে আয়াত পর্যন্ত তুমি তিলাওয়াত করবে।”
কোরআনের সঙ্গে সম্পর্ক শুধু ইবাদতের জন্য নয়; এটি দুনিয়ায় সুন্দর জীবন ও আখিরাতে মুক্তির পথ দেখায়। মুসলিমদের উচিত প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে কোরআন পড়া, যেমন ফজরের পর, আরবি তিলাওয়াতের পাশাপাশি মাতৃভাষায় অনুবাদও পড়া। এছাড়া কোনো আলেম বা কোরআন অধ্যয়ন চক্রের সঙ্গে যুক্ত হলে বোঝাপড়া আরও গভীর হয়।
অতএব, কোরআন পড়া, বোঝার চেষ্টা করা এবং তা জীবনে বাস্তবায়ন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অপরিহার্য। এটি শুধু ইবাদতের অংশ নয়; এটি মর্যাদা, কল্যাণ এবং জান্নাতে উচ্চতায় পৌঁছানোর চাবিকাঠি।


