বগুড়ায় আগাম আলু চাষি: কম দাম, বাড়তি খরচে চিন্তিত

বগুড়ায় আগাম আলু চাষি: কম দাম, বাড়তি খরচে চিন্তিত

জেলা প্রতিনিধি

বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলায় মৌসুম শুরু না হলেও স্বল্পমেয়াদি আগাম আলু তোলা শুরু হয়েছে। কৃষকেরা মাঠ থেকে আলু সংগ্রহ করে বস্তায় ভরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠাচ্ছেন, আবার কেউ সরাসরি হাটে বিক্রি করছেন। তবে চলতি বছরে আগাম আলুর দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম হওয়ায় চাষিরা লোকসানের আশঙ্কায় ভুগছেন।

কৃষকদের বক্তব্য অনুযায়ী, গত বছর আগাম আলু প্রতি মণ ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫শ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, যা উৎপাদন খরচ সামলাতে যথেষ্ট ছিল। তবে এই বছর নতুন আগাম আলুর দাম মাত্র ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা প্রতি মণ, যা কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকার সমান। কৃষকরা জানান, সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিকের মজুরি সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় এই দামে উৎপাদন খরচও উঠছে না।

শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষক মো. অহেদুল ইসলাম বলেন, “গত বছর আগাম আলুতে ভালো দাম পেয়েছিলাম। এবার সব খরচ বেড়েছে, কিন্তু আলুর দাম একেবারে পড়ে গেছে। এই দামে বিক্রি করলে পরিবার নিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।”

পাইকাররা জানান, বাজারে এখনও অনেক পুরনো আলু মজুত থাকায় নতুন আলুর প্রতি চাহিদা কম। গাবতলীর পাইকার মো. আলেক মিয়া বলেন, “গত বছরের আলু সারা বছর কম দামে বিক্রি হয়েছে। অনেক পুরনো আলু এখনও বাজারে আছে। তাই নতুন আলুর দাম চাপের মধ্যে রয়েছে।”

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর বগুড়ায় প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে প্রায় ১৭ টন ফলন পাওয়া যাচ্ছে। তবে বাজারে পুরনো আলুর সরবরাহ বেশি থাকায় নতুন আলুর দাম তুলনামূলক কম।

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান জানান, “গত বছর আলুর দাম সারা বছর কম থাকায় চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছিল। এ বছর ৫৫ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে গত বছর চাষ হয়েছিল ৬০ হাজার ৪৩৫ হেক্টর। কৃষকদের আমরা আলু চাষ কমিয়ে সরিষা বা অন্যান্য লাভজনক ফসলের দিকে ঝুঁকতে পরামর্শ দিয়েছিলাম, তবে অনেক কৃষক মানিয়ে নিতে পারেননি।”

রাজনীতি শীর্ষ সংবাদ