নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি ও আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বিএনপি সমমনা দলের কয়েকজন নেতাকে আসন ছাড় দিয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) গুলশানের বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি এই আসনগুলোতে নিজস্ব প্রার্থী মনোনয়ন দেবে না।
বৃহৎ রাজনৈতিক সমন্বয় ও সমমনা দলগুলোর সমর্থন নিশ্চিত করতে বিএনপি জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (এনডিএম), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাস, নাগরিক ঐক্য, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), গণসংহতি আন্দোলন ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্য নির্বাচনী আসন ছেড়ে দিয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব জানান, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ ঢাকা-১৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ঢাকা-১২ আসনে প্রার্থী হবেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর পটুয়াখালী-৩ আসনে লড়বেন এবং দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের জন্য ঝিনাইদহ-৪ আসন ছাড় দেওয়া হবে। যশোর-৫ আসনে প্রার্থী হবেন মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাস।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়া-২ আসনে, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার পিরোজপুর-১ আসনে এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এসব আসনে বিএনপি কোনো প্রার্থী মনোনয়ন দেবে না।
এছাড়া, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. রেদোয়ান আহমেদ কুমিল্লা-৭ আসনে প্রার্থী হবেন। ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “দলের সহযোগী ও মিত্রদের জন্য কিছু আসন ছাড় দিয়ে আমরা নির্বাচনে সমন্বয় ও ঐক্যকে আরও দৃঢ় করতে চাই।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপির এই পদক্ষেপ সমমনা দলের প্রার্থীদের নির্বাচনে সুবিধাজনক অবস্থান নিশ্চিত করবে এবং দলের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এছাড়া, এটি আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিরোধী শক্তির সমন্বয় ও জোটবদ্ধভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিএনপি এই ঘোষণার মাধ্যমে নিজস্ব প্রার্থী সংখ্যা কমিয়ে সমমনা ও মিত্রদলের প্রার্থীকে সহযোগিতা করার পথে অগ্রসর হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই কৌশল বিএনপির নির্বাচনী পরিকল্পনাকে আরও কার্যকর ও সমন্বিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।


