আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উত্তর কোরিয়া তাদের প্রথম পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিনের নতুন কিছু ছবি প্রকাশ করেছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে, প্রায় ৮ হাজার ৭০০ টন ওজনের এই সাবমেরিন পরিদর্শন করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। কিমের সঙ্গে তার কন্যা কিম জু আয়ে-ও উপস্থিত ছিলেন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বিশাল সাবমেরিনটি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভার্জিনিয়া ক্লাস’ অ্যাটাক সাবমেরিনের সমতুল্য বলে দাবি করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন অবস্থায় ইনডোর কেন্দ্রে প্রদর্শিত সাবমেরিনটির পাশেই কিম জং উন দক্ষিণ কোরিয়ার কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি সিউলের পারমাণবিক সাবমেরিন তৈরির পরিকল্পনাকে উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি ও আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
কিম জং উন স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা নীতি এখন শক্তিশালী আক্রমণাত্মক সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে গঠিত হচ্ছে। ২০২১ সালের সামরিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশটি হাইপারসনিক মিসাইল, দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং নৌ বাহিনীকে আধুনিকায়িত করার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিনের নির্মাণ উত্তর কোরিয়ার জন্য একটি বড় কৌশলগত অর্জন। সাধারণ সাবমেরিনগুলোকে ব্যাটারি চার্জের জন্য মাঝে মাঝে পানির ওপর উঠে আসতে হয়, কিন্তু পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিনগুলো দীর্ঘ সময় পানির নিচে অবস্থান করতে সক্ষম। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং ভারতের কাছে এই প্রযুক্তি বিদ্যমান।
দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষক হং মিন জানিয়েছেন, সাবমেরিনটিতে সম্ভবত ইতোমধ্যেই নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর স্থাপন করা হয়েছে এবং আগামী দুই বছরের মধ্যে এটি পরীক্ষার জন্য সমুদ্রে ভাসানো হতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নতুন সাবমেরিন উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা ও আক্রমণাত্মক সক্ষমতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে।
সামরিক ও কৌশলগত পরিপ্রেক্ষিতে, এই সাবমেরিন উত্তর কোরিয়াকে সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে দীর্ঘ সময় অবস্থান করতে সক্ষম করে, যা দেশের প্রতিরক্ষা নীতিকে আরও শক্তিশালী এবং স্থায়ী করতে সাহায্য করবে।


