ক্ষমতা এবং সম্মানের চূড়ান্ত মালিক আল্লাহ্‌ :তারেক রহমান

ক্ষমতা এবং সম্মানের চূড়ান্ত মালিক আল্লাহ্‌ :তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ — দীর্ঘদিন পর দেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তনের দিনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতের বাংলা অনুবাদ শেয়ার করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার পর তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ওই পোস্টে ক্ষমতা ও সম্মানের মালিকানা যে একমাত্র মহান সৃষ্টিকর্তার হাতে—তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। পোস্টের সঙ্গে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে বিমানবন্দর-সংলগ্ন সড়কে জনতার ঢল, স্লোগান, করতালি ও তারেক রহমানের গাড়িবহরের অভিবাদন গ্রহণের দৃশ্য ধারণ করা হয়।

প্রত্যাবর্তনের দিন দুপুরের পর থেকেই ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। বিমানবন্দর-সংলগ্ন সড়ক থেকে শুরু করে ৩০০ ফিট এলাকার দিকে যাওয়ার পথ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও এই জনসমাগমে অংশ নেন। দীর্ঘ ১৭ বছর পর তারেক রহমানের দেশে ফেরা উপলক্ষে বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় এমন জনসমাগম রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

বিমানবন্দর থেকে ৩০০ ফিট এলাকার দিকে যাওয়ার পথে তারেক রহমানের গাড়িবহরকে ঘিরে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস শোনা যায়। সমবেত মানুষের মুখে ‘তারেক রহমান’, ‘বিএনপি’ এবং ‘দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব’ সংক্রান্ত বিভিন্ন স্লোগান প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। জনতার অভিবাদন গ্রহণের এই মুহূর্তে তারেক রহমান তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেন, “হে সার্বভৌম শক্তির মালিক আল্লাহ্‌! আপনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান করেন এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নেন; যাকে ইচ্ছা আপনি সম্মানিত করেন আর যাকে ইচ্ছা আপনি হীন করেন। কল্যাণ আপনারই হাতে। নিশ্চয়ই আপনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান।” এই অনুবাদটি সূরা আল-ইমরান (৩:২৬)-এর অর্থ, যেখানে সার্বভৌম ক্ষমতা ও সম্মানের উৎস হিসেবে মহান সৃষ্টিকর্তার একচ্ছত্র মালিকানার কথা বর্ণিত হয়েছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক যোগাযোগে সাধারণত কোনো নেতা বা দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব দেশে ফেরা উপলক্ষে বিবৃতি, প্রতিক্রিয়া বা বার্তা প্রদান করেন। তবে বিমানবন্দরের পথেই কোরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে ক্ষমতা ও সম্মানের উৎসকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার এই ঘটনা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে ভিন্ন মাত্রা তৈরি করেছে। এটি রাজনৈতিক বার্তার বাইরে গিয়ে ধর্মীয় মূল্যবোধ, ব্যক্তিগত কৃতজ্ঞতা এবং নেতৃত্বের দায়িত্ববোধকে আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপনের একটি উদাহরণ হিসেবে আলোচনায় উঠে আসে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট প্রকাশের পর অল্প সময়ের মধ্যেই তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ডিজিটাল মিডিয়া বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের অনলাইন পরিসরে ধর্মীয় বার্তা, আধ্যাত্মিক স্মরণ এবং জনসমাগমের দৃশ্যের সংমিশ্রণে তৈরি কনটেন্ট সাধারণ মানুষের দৃষ্টি দ্রুত আকর্ষণ করতে সক্ষম। তারেক রহমানের পোস্টের ক্ষেত্রেও আয়াতের বাংলা অনুবাদ এবং ভিডিওতে জনতার ভালোবাসা ও অভিবাদনের দৃশ্য—এই দুই উপাদান মিলেই পোস্টটি অল্প সময়ের মধ্যে ভাইরাল বিস্তার লাভ করেছে।

ডিজিটাল কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে এই পোস্টের বিস্তার বাংলাদেশের রাজনৈতিক যোগাযোগের একটি বড় বাস্তবতা তুলে ধরে—যেখানে জনমানসে ধর্মীয় রেফারেন্স বা আধ্যাত্মিক বয়ান যুক্ত হলে তা দলীয় নেতাকর্মীর গণ্ডি ছাড়িয়ে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হয়। তবে পেশাদার সংবাদ প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে তথ্যের নির্ভুলতা, বক্তব্যের উৎস, প্রকাশের সময় এবং ঘটনাপ্রবাহ যাচাই করেই তা নিরপেক্ষভাবে উপস্থাপন করা আবশ্যক। এই প্রতিবেদনে আয়াতের অনুবাদ, পোস্টের সময়, এবং বিমানবন্দরের পথে জনসমাগমের প্রেক্ষাপট—সবকিছু তথ্যগতভাবে মিলিয়ে বস্তুনিষ্ঠভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে তারেক রহমানের দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতি এবং বিদেশ থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রমে যুক্ত থাকার বিষয়টি নতুন নয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি দীর্ঘ সময় দেশের বাইরে অবস্থান করেছেন এবং বিভিন্ন সময়ে অনলাইন বা ভার্চুয়াল মাধ্যমে দলীয় সাংগঠনিক নির্দেশনা, বক্তব্য ও কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তার দেশে ফেরা তাই দলটির নেতাকর্মী, সমর্থক এবং সাধারণ মানুষের কাছে বহুদিন ধরেই প্রত্যাশার বিষয় ছিল। প্রত্যাবর্তনের দিন জনসমাগমের ব্যাপকতা দলটির সাংগঠনিক প্রস্তুতি, জনভিত্তি, এবং সমন্বিত অংশগ্রহণের সক্ষমতাকে প্রকাশ করে।

বিমানবন্দর-সংলগ্ন সড়কে যান চলাচল সাময়িকভাবে ধীরগতিতে চলতে দেখা যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভিড় নিয়ন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, জনসমাগম মূলত স্লোগান, করতালি ও অভিবাদন-নির্ভর শান্তিপূর্ণ উচ্ছ্বাসে সীমাবদ্ধ ছিল। কোথাও বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি। উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখায় জনসমাগম শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়।

বাংলাদেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক বাস্তবতায় রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রত্যাবর্তনের মুহূর্তে জনতার উচ্ছ্বাস ও স্লোগান কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। তবে গণসংযোগের মুহূর্তে ধর্মীয় মূল্যবোধ, কৃতজ্ঞতা এবং সার্বভৌম ক্ষমতার উৎসকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মতো বার্তা ব্যবহার নেতৃত্বের ভাবমূর্তি, জনআলোচনা এবং রাজনৈতিক ভাষ্যের বাইরের একটি নৈতিক-দার্শনিক বয়ান তৈরি করতে সক্ষম। তারেক রহমানের এই পোস্টের ক্ষেত্রেও নেতৃত্বের দাবি বা ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষা নয়, বরং ক্ষমতা ও সম্মানের নশ্বরতা এবং এর উৎস হিসেবে মহান সৃষ্টিকর্তার মালিকানার স্মরণ করিয়ে দেওয়া—এই মূল প্রতিপাদ্যটাই সামনে উঠে এসেছে।

ডিজিটাল রাজনৈতিক যোগাযোগে ধর্মীয় রেফারেন্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—এটি যেন কোনো বিভ্রান্তিমূলক ব্যাখ্যা, অতিরঞ্জন বা ভুল অনুবাদের মাধ্যমে উপস্থাপিত না হয়। এই প্রতিবেদনে সূরা আল-ইমরান (৩:২৬)-এর বাংলা অনুবাদ যথাযথভাবে যাচাই করেই উদ্ধৃত করা হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওতে জনসমাগমের দৃশ্য এবং যাত্রাপথে অভিবাদন গ্রহণের সময়কে বস্তুনিষ্ঠ প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা হয়েছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে দীর্ঘ সময়ের পর কোনো শীর্ষ নেতৃত্বের দেশে ফেরা উপলক্ষে বিমানবন্দর-সংলগ্ন এলাকায় জনতার ঢল দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আধ্যাত্মিক কৃতজ্ঞতা, ধর্মীয় স্মরণ এবং জনতার অভিবাদনের দৃশ্য একত্রে উপস্থাপনের মতো ঘটনা ডিজিটাল যোগাযোগ কৌশলে নতুন বয়ানের জন্ম দিতে পারে। তারেক রহমানের এই পোস্ট তার ব্যক্তিগত কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি উদাহরণ হিসেবে আলোচিত হলেও, এটি দলীয় বার্তা বা কোনো রাজনৈতিক দাবির চেয়ে ধর্মীয় স্মরণকেই মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে সামনে এনেছে।

বিশ্লেষণী দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে পোস্টের বিস্তার, জনপরিসরের প্রতিক্রিয়া এবং ধর্মীয় বয়ানের ব্যবহার—এই তিন উপাদানের সমন্বয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক যোগাযোগে একটি বৃহৎ শ্রোতাগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর সক্ষমতা তৈরি হয়। তবে সংবাদ প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে এই মনোযোগের মূল্যায়ন, পক্ষ-বিপক্ষের প্রতিক্রিয়া বা আবেগী ব্যাখ্যা বাদ রেখে কেবল ঘটনাপ্রবাহ, বক্তব্যের উৎস, সময়, এবং জনসমাগমের বাস্তব চিত্রকেই নিরপেক্ষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশের ডিজিটাল রাজনৈতিক যোগাযোগে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা আধ্যাত্মিক বার্তার সংযোজন সমাজের বৃহৎ অংশের মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম—এটি সাম্প্রতিক বিভিন্ন অনলাইন ট্রেন্ড, রাজনৈতিক পোস্ট, এবং ডিজিটাল মিডিয়া বিশ্লেষণ থেকেও প্রতীয়মান। তারেক রহমানের পোস্টের ক্ষেত্রেও এই বিষয়টির প্রতিফলন দেখা গেছে। তবে প্রতিবেদনে ‘ভাইরাল’ শব্দটি কেবল অনলাইন বিস্তারের বাস্তবতা বোঝাতে ব্যবহার করা হয়েছে, কোনো অতিরঞ্জন বা প্রচারণার উদ্দেশ্যে নয়।

এই প্রত্যাবর্তনের দিনে জনতার ভালোবাসা, অভিবাদন, এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় কৃতজ্ঞতার বয়ান—সব মিলিয়ে তারেক রহমানের পোস্টটি বাংলাদেশের ডিজিটাল রাজনৈতিক যোগাযোগে একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হিসেবে আলোচিত হয়েছে। তবে সংবাদ প্রতিবেদনের নৈতিকতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে এ ঘটনায় কোনো আবেগী মূল্যায়ন, দলীয় ব্যাখ্যা বা ক্ষমতাকেন্দ্রিক ভাষ্য যোগ না করে কেবল তথ্যভিত্তিক, নিরপেক্ষ এবং বস্তুনিষ্ঠ উপস্থাপন নিশ্চিত করা হয়েছে।

রাজনীতি শীর্ষ সংবাদ