তারেক রহমানের পূর্ণাঙ্গ ভাষণ: দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার আহ্বান

তারেক রহমানের পূর্ণাঙ্গ ভাষণ: দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বৃহস্পতিবার রাজধানীর ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করে দেশের মানুষকে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে আনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তার অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রার্থনা রাব্বুল আলামিনের দরবারে, যার রহমতে তিনি দীর্ঘ সময় পর মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে পেরেছেন। এ সময় তার সঙ্গে তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এবং মেয়ে জাইমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।

তারেক রহমান তাঁর ভাষণে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি তোলেন এবং বলেন, দেশের স্বাধীনতা বহু শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে। তিনি ৭৫-এর ৭ই নভেম্বরের বিপ্লব ও ৯০-এর স্বৈরাচ্যবিরোধী আন্দোলনের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, জনগণ সব সময় নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় সজাগ ও সক্রিয় থেকেছে। এছাড়া ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার প্রয়াসকে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ কথা বলার অধিকার এবং ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে চায়। দেশবাসীর জন্য তিনি একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা তুলে ধরেন, যেখানে নারী, পুরুষ ও শিশু সবাই নিরাপদে চলাচল করতে পারবে। তিনি দেশের বিভিন্ন শ্রেণি, ধর্ম ও পেশার মানুষদের সমানভাবে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আহ্বান জানান।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও উল্লেখ করেন, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, কয়েক কোটি যুবক, শিশু ও প্রতিবন্ধী মানুষসহ কৃষক-শ্রমিকদের একটি প্রত্যাশা রয়েছে—এ দেশের জনগণের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ হলে এই লক্ষ কোটি মানুষের প্রত্যাশা পূরণ সম্ভব হবে। তিনি ৭১ সালের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, তাদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে একটি সুষ্ঠু ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হবে।

তারেক রহমান গত কয়েক দশকে দেশে গুম ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করেন এবং ২৪-এর আন্দোলনের শহীদ ওসমান হাদির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মেরাই আগামী দিনে দেশকে নেতৃত্ব দেবে এবং দেশ গড়ার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। তিনি রাজনৈতিক নেতৃত্বের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে শান্তি রক্ষায় ধৈর্যশীল থাকার আহ্বান জানান।

বক্তব্যে তিনি বলেন, “আই হ্যাভ আ প্ল্যান ফর দ্য পিপল, অফ মাই কান্ট্রি, ফর মাই কান্ট্রি।” এই পরিকল্পনা দেশের মানুষের কল্যাণ এবং দেশের উন্নয়নের জন্য বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি জনগণের সহযোগিতা প্রয়োজনীয় উল্লেখ করে বলেন, আল্লাহর সাহায্য থাকলে প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।

তারেক রহমান তার মা ও দলের সভাপতি বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করেন এবং দেশের মানুষের প্রতি ধৈর্য, শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় সমর্থনের আহ্বান জানান। তিনি সকলকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে এবং দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেন।

ভাষণের সমাপ্তিতে তিনি জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “আল্লাহ হাফেজ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জিন্দাবাদ। আসসালামু আলাইকুম।”

রাজনীতি শীর্ষ সংবাদ