তারেক রহমান ও জাইমা রহমানের ভোটার নিবন্ধন নথি রোববার নির্বাচন কমিশনে উপস্থাপন

তারেক রহমান ও জাইমা রহমানের ভোটার নিবন্ধন নথি রোববার নির্বাচন কমিশনে উপস্থাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) রোববার (২৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠেয় বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তাঁর মেয়ে জাইমা রহমানের ভোটার নিবন্ধনসংক্রান্ত নথি উপস্থাপন করা হবে। তফসিল ঘোষণার পর নতুন করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদন প্রয়োজন হওয়ায় এই নথি কমিশনের বিবেচনার জন্য তোলা হচ্ছে। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

সিনিয়র সচিব জানান, গুলশান এলাকার নির্ধারিত ওয়ার্ডে তারেক রহমান ও জাইমা রহমানের ভোটার নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় সব আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে নির্ধারিত ফরম পূরণ, ছবি তোলা এবং বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ—যার মধ্যে আঙুলের ছাপ ও স্বাক্ষর অন্তর্ভুক্ত—সবই শেষ হয়েছে। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নতুন করে কোনো নাগরিককে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হলে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। সে কারণেই তাঁদের নিবন্ধন নথি কমিশনের বৈঠকে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

আখতার আহমেদ বলেন, ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯–এর ১৫ ধারায় নির্বাচন কমিশন যেকোনো যোগ্য ও প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার এখতিয়ার রাখে। আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও তথ্য যাচাই সাপেক্ষে ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করা হয়। সেই বিবেচনায় তারেক রহমান ও জাইমা রহমানের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং এখন তা কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

তিনি আরও জানান, রোববার কমিশনের সামনে নথি উপস্থাপনের পর কমিশন চাইলে আনুষ্ঠানিক সভার মাধ্যমে অথবা নথিভিত্তিক প্রক্রিয়ায় বিষয়টি অনুমোদন দিতে পারে। কোন পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী প্রশাসনিক ও প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংক্রান্ত অগ্রগতির বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ায় খুব শিগগিরই তাঁদের এনআইডি নম্বর তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শুধু নম্বর তৈরি হলেই তা চূড়ান্ত ধরা হয় না। নিবন্ধনের তথ্য সিস্টেমে আপলোড করার পর ফিঙ্গারপ্রিন্ট, স্বাক্ষর এবং ফেস আইডিসহ বিভিন্ন বায়োমেট্রিক তথ্যের মিল যাচাই করা হয়। এসব প্রযুক্তিগত যাচাই-বাছাই শেষ হলে এনআইডি নম্বর চূড়ান্তভাবে ইস্যু করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লাগতে পারে বলেও জানান তিনি।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, তফসিল ঘোষণার পর ভোটার তালিকায় নতুন নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও আইনি কাঠামো বজায় রাখার জন্য কমিশন প্রতিটি আবেদন আলাদাভাবে পর্যালোচনা করে থাকে। বিশেষ করে আলোচিত বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আইন ও বিধিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে কি না, সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৭ বছর তিন মাস নির্বাসনে থাকার পর গত ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন তারেক রহমান। দেশে ফেরার পর তাঁর ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরে একজন যোগ্য নাগরিক হিসেবে আইন অনুযায়ী প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে।

কমিশনের রোববারের বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত আসে, তার ওপর নির্ভর করবে তারেক রহমান ও জাইমা রহমানের ভোটার তালিকায় চূড়ান্ত অন্তর্ভুক্তি এবং এনআইডি ইস্যুর পরবর্তী ধাপ। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, তা আইন ও প্রচলিত বিধিবিধান অনুসরণ করেই নেওয়া হবে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ