নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকার হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘন কুয়াশার প্রভাবে শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) মধ্যরাত থেকে রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ভোর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ে অবতরণ করতে পারেনি। দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ার কারণে কয়েকটি ফ্লাইট ঢাকার আকাশে চক্কর দেয় এবং দেরিতে অবতরণ করে।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, শনিবার রাত ১টা থেকে রোববার ভোর ৬টার মধ্যে অন্তত ৬টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ঢাকায় অবতরণের কথা ছিল। তবে ঘন কুয়াশার কারণে রানওয়ে স্পষ্ট না থাকায় ফ্লাইটগুলো অপেক্ষা করতে থাকে। এসব ফ্লাইটের মধ্যে ছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কুয়ালালামপুর থেকে আসা ফ্লাইট, সালাম এয়ারের মাস্কাট থেকে আসা ফ্লাইট, এয়ার অ্যারাবিয়ার শারজাহ থেকে আসা ফ্লাইট, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সিঙ্গাপুর থেকে আসা ফ্লাইট, বিমানের দুবাই ফ্লাইট এবং কাতার এয়ারওয়েজের দোহা থেকে আসা ফ্লাইট।
ফ্লাইটগুলো ঢাকার আকাশে চক্কর দেওয়ার পর অবশেষে দেরিতে অবতরণ করে। এসব ফ্লাইটের দেরির সময় ছিল ২ থেকে ৫ ঘণ্টা। উদাহরণস্বরূপ, কুয়ালালামপুর থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি ৫ ঘণ্টা, মাস্কাট থেকে আসা সালাম এয়ারের ফ্লাইট ৪ ঘণ্টা, শারজাহ থেকে আসা এয়ার অ্যারাবিয়ার ফ্লাইট ২ ঘণ্টা, সিঙ্গাপুর থেকে আসা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৪ ঘণ্টা, দুবাই থেকে আসা বিমানের ফ্লাইট ২ ঘণ্টা এবং দোহা থেকে আসা কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইট ৫ ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছায়।
ফ্লাইটের দেরির কারণে সেগুলোর ঢাকা থেকে পরবর্তী উড্ডয়নও বিলম্বিত হয়েছে। তবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, কোনো ফ্লাইট অন্য গন্তব্যে ডাইভার্ট করা হয়নি।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ ঢাকা পোস্টকে জানান, “ঘন কুয়াশার কারণে আজ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমনকারী ও বহির্গমনকারী কিছু ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ের তুলনায় বিলম্বে অবতরণ ও উড্ডয়ন করেছে। তবে কোনো ফ্লাইট অন্য গন্তব্যে ডাইভার্ট করা হয়নি।”
তিনি আরও জানান, “বর্তমানে আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং ফ্লাইট অপারেশন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে। বিলম্বিত ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্য সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা দিচ্ছে।”
এদিকে, শনিবার রাতে দেওয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রোববার সকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে, যা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্তও স্থায়ী হতে পারে। এতে সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচলও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় শীতের অনুভূতিও বাড়তে পারে।
ফ্লাইটগুলোর দেরি হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি তৈরি হলেও, সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সগুলো তাদের যাত্রীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।