জেলা প্রতিনিধি
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে দেশের মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে। নতুন তালিকায় গত বছরের তুলনায় ১২ দিন কমানো হয়েছে এবং পবিত্র রমজান মাসের অর্ধেক সময় স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ঘোষণার পর শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেক শিক্ষক মনে করছেন, রোজা থাকা অবস্থায় পাঠদান করা কঠিন, তাই পুরো রমজান মাসই ছুটি হওয়া উচিত।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কর্মকর্তা জানান, রমজানে ক্লাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সিলেবাস সময়মতো শেষ করার উদ্দেশ্যে। “শুক্র ও শনিবার যেসব দিন পড়া হয়েছে, সেগুলো ছুটির হিসাবের বাইরে রাখা হয়েছে। আমাদের আশা, শিক্ষকরা বিষয়টি বুঝবেন,” বলেন এক কর্মকর্তা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বছরে ৫২টি শুক্রবার ও ৫২টি শনিবারসহ মোট ৩৬৫ দিনে ১৬৮ দিন ছুটি থাকে। পরীক্ষাসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ড মিলিয়ে ক্লাস কার্যত ১৫০ দিনের বেশি হয় না। সিলেবাস সম্পূর্ণ করতে এবং শিক্ষার্থীদের শ্রেণি পাঠ নিশ্চিত করতে গ্রীষ্মকালীন ছুটি কমানো হয়েছে এবং রমজানে দুই সপ্তাহ ক্লাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তালিকা অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের অর্ধ-বার্ষিক বা প্রাক নির্বাচনি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৮ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত, ফল প্রকাশ হবে ২৯ জুলাই। নির্বাচনী পরীক্ষা ২৮ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে, এবং ফল প্রকাশ করা হবে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে। বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৯ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত, ফল প্রকাশ করতে হবে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে।
ছুটির তালিকায় দেখা গেছে, ৮ মার্চ থেকে রমজান পর্যন্ত ঈদুল ফিতর, জুমাতুল বিদা, স্বাধীনতা দিবসসহ কয়েকটি ছুটি মিলিয়ে টানা ১৯ দিন স্কুল বন্ধ থাকবে। দীর্ঘ ছুটি চলবে ২৬ মার্চ পর্যন্ত, পরে ২৯ মার্চ স্কুল খুলবে। ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি ২৪ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত, যা গত বছরের তুলনায় তিন দিন কম। দুর্গাপূজায় এবার পাঁচ দিন ছুটি রয়েছে। এছাড়া লক্ষ্মী পূজা, প্রবারণা পূর্ণিমা ও ফাতেমা ই ইয়াজ দাহমে একদিন করে ছুটি রাখা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের প্রধানের হাতে সংরক্ষিত দুই দিন ছুটি রাখা হয়েছে, যা গত বছর তিন দিন ছিল। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানসমূহের দিনেও নিয়ম অনুযায়ী ছুটি থাকবে।
শিক্ষকরা এই সিদ্ধান্তকে যথাযথভাবে মানতে অনিচ্ছুক হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং প্রশাসন উভয়পক্ষের মধ্যে সমন্বয় ও আলোচনা প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।


