খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও প্রতিনিধি

খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও প্রতিনিধি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বিপুল জনসমাগম ও শোকাতুর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা শুরু হয় এবং মাত্র দুই মিনিটের মধ্যে, বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে তা সম্পন্ন হয়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক জানাজায় ইমামতি করেন।

জানাজার পর বিদেশি মন্ত্রী ও কূটনীতিকরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিজ নিজ দেশের সরকারপ্রধানদের পাঠানো শোকবার্তা হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তানের পার্লামেন্ট স্পিকার সরদার আইয়াজ সাদিক, নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালানন্দ শর্মা এবং ভুটানের পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল।

শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে মুসলিম দেশগুলোর কূটনীতিকদের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিরাও অংশ নেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মেগান বোল্ডিন, রাশিয়ার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত একেতেরিনা সেমনোভা, সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার মিশেল লি ও ফিলিস্তিনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জিয়াদ এম হামাদ জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, লিবিয়ার রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালিব এস এম সোলায়মান, অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রিলে, দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জিনহি ব্যাক, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং এবং ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভেশিও জানাজার মধ্যে উপস্থিত থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।

জানাজার আয়োজন এবং শ্রদ্ধা নিবেদন কার্যক্রমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষও উপস্থিত ছিলেন। এ প্রক্রিয়ায় দেশের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং সামাজিক মহলের পাশাপাশি সাধারণ জনগণও অংশগ্রহণ করে বিপুল জনসমাগমের সাক্ষ্য দেন।

জানাজার পর অনুষ্ঠিত শ্রদ্ধা নিবেদন সভায় বিদেশি কূটনীতিকরা খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। তারা বলেন, বাংলাদেশে তার রাজনৈতিক ও সামাজিক অবদান স্মরণীয় থাকবে এবং তিনি দেশের রাজনীতি ও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এই শোকবার্তা কূটনৈতিকভাবে তাদের নিজ নিজ সরকারের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়।

এছাড়া জানাজার সময় সামাজিক নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা বজায় রাখার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখে, যাতে অংশগ্রহণকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পারেন।

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মী এবং সাধারণ জনগণ তাঁর জন্য শ্রদ্ধা ও প্রার্থনা জানিয়েছেন। বিএনপি’র শীর্ষ নেতৃত্ব জানাজা অনুষ্ঠানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন এবং সর্বশেষ অনুষ্ঠান পর্যন্ত অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।

এই জানাজার মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং সামাজিক মহল একত্রিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, যা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ও স্মরণীয় ঘটনা হিসেবে ধরা হবে।

রাজনীতি শীর্ষ সংবাদ