অর্থনীতি ডেস্ক
২০২৫ সালে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের পারফরম্যান্স আবারও হতাশাজনক হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের বাজার উল্লেখযোগ্যভাবে পিছিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এই বছর ৬.৭৩ শতাংশ কমে ৪,৮৬৫ পয়েন্টে নেমে এসেছে, যেখানে ২০২৪ সালে এটি ছিল ৫,২১৬ পয়েন্ট।
ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার পুঁজিবাজারের পারফরম্যান্স এই বছরের তুলনায় অনেক উন্নত। পাকিস্তানের কেএসই সূচক ৪৫.২৯ শতাংশ বেড়ে ১,০১৪,৭৩৪ পয়েন্টে পৌঁছেছে। শ্রীলঙ্কার সিএসইঅল সূচক ৪০.৭৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২২,৪৪৬ পয়েন্টে পৌঁছেছে। ভারতের বিএসই সেনসেক্স ৮.৫২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৮৭,৯৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
যদিও সূচক কমেছে, বাজার মূলধন ২.৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬,৭৮,৬২০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। তবে লেনদেন কমেছে; ২০২৫ সালে ডিএসইর দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৫২১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, যা ২০২৪ সালের ৬৩১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার তুলনায় ১৫.৭১ শতাংশ কম।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল অতীতের অনিয়ম ও দুর্নীতির অবসান এবং শেয়ারবাজারের পুনরুদ্ধার। যদিও কিছু অপরাধীর বড় আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে, বাস্তবে আদায় হয়নি। সরকারি নির্দেশনার পরও সরকারি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করা সম্ভব হয়নি।
পুঁজিবাজার অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থার দূরত্বও স্পষ্ট দেখা গেছে। বাজারে আস্থা বৃদ্ধির জন্য যেসব সংস্কার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার কোনো বাস্তব প্রভাব পড়েনি। পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স গঠিত হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি; কেবল মার্জিন রুলস ও মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
২০২৫ সালে কিছু নেতিবাচক ঘটনা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ণ করেছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ উপেক্ষা করে পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া তালিকাভুক্ত আরও আটটি ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বন্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মোটমাট, ২০২৫ সালে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিক হতাশার মতো, এ বছরও বিনিয়োগকারীরা আশাহত হয়েছেন।


