দেশের ঘাটতি বাজেট প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার সমতুল্য ঋণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক ঋণ দাতা সংস্থা গ্লোবাল মাইডাস। এ ঋণ দিয়ে মেগা গ্রিন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবে সরকার। সম্প্রতি গ্লোবাল মাইডাস গ্রুপের চেয়ারম্যান ইনডার প্রিট সিংহ এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠিয়েছেন অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে (ইআরডি)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এ তথ্য।
গ্লোবাল মাইডাসের বাংলাদেশের প্রধান শেখ সরওয়ার বলেন, সরকারের বাজেট ঘাটতি ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এই ঘাটতি বাজেট সমতুল্য ঋণ দিতে আগ্রহী আমরা। বর্তমান এ দেশের অর্থ সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার খোঁজ নেয়া হচ্ছে। আমরা বড় অঙ্কে ঋণ দিতে আগ্রহী। সুদের হার নির্ধারণ করা হবে আলোচনার ভিত্তিতে। তবে সেটি হবে আন্তর্জাতিক রেট অনুযায়ী।
নেপাল, সিঙ্গাপুর, ভারতসহ কয়েকটি দেশে বড় অঙ্কের ঋণ দিয়েছে গ্লোবাল মাইডাস। এখন বাংলাদেশে স্বল্প সুদে ঋণ দিতে এগিয়ে আসছে এ সংস্থা।
এ প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, গ্লোবাল মাইডাস নানা প্রকল্পে বড় অঙ্কের ঋণ দিতে চায়। এ সংক্রান্ত একটা চিঠি দিয়েছে তারা। এটা ইআরডিতে পাঠানো হয়েছে। অপর দিকে ইআরডির এশীয়ান ডেস্কের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার জানান, বিষয়টি বিবেচনাধীন আছে।
অর্থ সচিবকে পাঠানো চিঠিতে গ্লোবাল মাইডাস বলেছে, বড় ধরনের গ্রিন ফিল্ড প্রকল্প, রেলওয়ে, মেট্রোরেল, বিমানবন্দর উন্নয়ন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও আইটি পার্কের মতো বড় প্রকল্পে ঋণের প্রস্তাব দিচ্ছে গ্লোবাল মাইডাস। বিভিন্ন ধরনের ঋণের পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি খাতে বন্ডে বিনিয়োগও করেছে গ্লোবাল মাইডাস। সংস্থাটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের প্রকল্পে (পিপিপি) আগ্রহের কথাও জানিয়েছে। ঋণ দেয়ার আগ্রহ জানিয়ে গ্লোবাল মাইডাসের পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করার প্রস্তাব দিয়েছে। চিঠিতে আরও বলা হয়, কর্পোরেট বন্ড, সভরেইন বন্ড, ডেভেলপমেন্ট বন্ডসহ যে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক খাতে ঋণ কর্মসূচি দিয়ে থাকে এ সংস্থা।
করোনাভাইরাসের কারণে সরকারের নানাভাবে ব্যয় বেড়েছে। অপর দিকে রাজস্ব ঘাটতির কারণে অর্থ সংকট তৈরি হয়েছে। যে কারণে সরকার কৃচ্ছ সাধনের পথে হাঁটছে। অর্থ সংকটের কারণে প্রায় চারশ’ নিম্নমানের প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ রাখা হয়েছে। শুধু বেতন-ভাতা ও পরিবহন ব্যয় দিয়ে এসব প্রকল্প টিকিয়ে রাখা হচ্ছে। এ অবস্থায় গ্লোবাল মাইডাসের বড় ঋণ প্রস্তাবকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার জন্য গ্লোবাল মাইডাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এছাড়া গ্লোবাল মাইডাসের প্রস্তাবিত ঋণের গ্রেস পিরিয়ড প্রকল্পভেদে এক থেকে দুই বছর। ২৫ বছরের মধ্যে পুরো ঋণ শোধ করতে হবে। এ ঋণের বিপরীতে সর্বোচ্চ দুই শতাংশের কম সুদ পরিশোধ করতে হবে। যা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনসহ (আইএফসি) আরও কয়েকটি সংস্থার তুলনায় কম।