ঢাকা: দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৪৯তম দিনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আজ মারা গেছে ১৯ জন। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫১৯ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৬ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছিলেন ১৩ জন। দেশে এ ভাইরাসে এ পযর্ন্ত ৬ হাজার ১৫৯ জন মারা গেছে। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত ৭ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান। আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসা মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫১৯ জন। গতকালের চেয়ে আজ ২১৮ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৭৩৭ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থ্যতার হার ৮০ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮০ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থ্যতার হার শূন্য দশমিক ০২ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ৫৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৭৬৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৭৮ জন কম শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৭ হাজার ১১২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলে ১ হাজার ৮৪৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১০ দশমিক ৭৮ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ২ দশমিক ২৭ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৫ লাখ ১৫ হাজার ৩৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ২৮ হাজার ৯৬৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ০৫ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৭ দশমিক ০৮ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৯৬৭ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৬ হাজার ৯৬৮ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৩ হাজার ১টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৫টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৫৩৯ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৭ হাজার ১১২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৩ হাজার ৫৭৩টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৫১৮ দশমিক ৭৮ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২০৩৩ দশমিক ৯০ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৬ দশমিক ১৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ১৯ জনের মধ্যে পুরুষ ১৩ জন, আর নারী ৯ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৭৪১ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৪১৮ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ, নারী ২৩ দশমিক ০২ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ১৯ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৫ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৪ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন, যা দশমিক ৪৭ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৮ জন, যা দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৪১ জন, যা ২ দশমিক ২৯ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩১ জন, যা ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৫৭ জন, যা ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৬২৪ জন, যা ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ২২৯ জন, যা ৫২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৩ জন, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ১ জন করে এবং রংপুরে ৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ২২৬ জন, যা ৫২ দশমিক ৩৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২০৯ জন, যা ১৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৭৬ জন, যা ৬ দশমিক ১০ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৮১ জন, যা ৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২০৬ জন, যা ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৫৭ জন, যা ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৭৬ জন, যা ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২৮ জন, যা ২ দশমিক ০৮ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৩০ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৬৮৯টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৯৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১২০টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৭০টি, ভর্তিকৃত রোগী ১২৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৪৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১১ জন ও শয্যা খালি আছে ২৮টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ১৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫২৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৬৩৯টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৬৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪২টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৪৫৩টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৪৮২ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৯৭১টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৭৪ জন এবং খালি আছে ২৯০টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬১৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৯৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৯৩টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৫১৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ১১৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩৩ জন, রংপুর বিভাগে ৩৬ জন, খুলনা বিভাগে ২৬ জন, বরিশাল বিভাগে ১৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ২১ জন, সিলেট বিভাগে ৪২ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩১ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৭৯১ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯৫১ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৪৭৬ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ২৫ হাজার ৬২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৪১৪ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৮৭ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ২৫১ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৮ হাজার ১৭১ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৫৮ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ১১৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৬ হাজার ৩৯৭ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১১ লাখ ৭৫ হাজার ২০৭ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৭৩০টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২০৬টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৯৩৬টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৫ লাখ ৫ হাজার ২০৭টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৪৩৭ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৪০ হাজার ৭৬৫ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১২ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮ লাখ ৫৫ হাজার ১৮৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৫১ হাজার ৮৮০ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১২ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ কোটি ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ২৬১ জন এবং ১২ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।