এক হত্যা মামলায় আপিল বিভাগের দেওয়া ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদনের রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন বিচাপতির আপিল বেঞ্চ পূর্ণাঙ্গ আপিল এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে যাবজ্জীবন অর্থ সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির স্বাভাবিক মৃত্যু হওয়া পর্যন্ত সময়কে বোঝায়। তবে দণ্ডবিধির ৪৫ ও ৫৩ ধারা যদি দণ্ডবিধির ৫৫ ও ৫৭ ধারা এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ (এ) র ধারার সঙ্গে মিলিয়ে পড়া হয়, সে ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন অর্থ ৩০ বছর বিবেচনা করতে হবে।
রায়ে আরও বলা হয়, তবে যদি কোনো ক্ষেত্রে আদালত যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু বা স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া সময় পর্যন্ত উল্লেখ করে দেন, সে ক্ষেত্রে এবং যুদ্ধপরাধীদের ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন ৩০ বছরের বিধান প্রযোজ্য হবে না।
ভার্চুয়াল আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্ত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আর আসামি পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আইনজীবী শিশির মনির।
এ রায়ের ব্যাপারে আইনজীবী মো. শিশির মনির বলেন, ‘বাংলাদেশ ফৌযদারি কার্যবিধি অনুযায়ী যাবজ্জীবন সাজা ৩০ বছর ধরে হিসাব করতে হবে। তবে কোনো ব্যক্তিকে যদি আদালত বা ট্রাইবুনাল আমৃত্যু কারাগারের আদেশ দিয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে তিনি কোনো রেয়াত বা বেনিফিট পাবেন না।’
যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর, তবে…
১ ডিসেম্বর ২০২০ ১১:২১ | আপডেট: ১ ডিসেম্বর ২০২০ ১১:৩৭
এক হত্যা মামলায় আপিল বিভাগের দেওয়া ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদনের রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন বিচাপতির আপিল বেঞ্চ পূর্ণাঙ্গ আপিল এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে যাবজ্জীবন অর্থ সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির স্বাভাবিক মৃত্যু হওয়া পর্যন্ত সময়কে বোঝায়। তবে দণ্ডবিধির ৪৫ ও ৫৩ ধারা যদি দণ্ডবিধির ৫৫ ও ৫৭ ধারা এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ (এ) র ধারার সঙ্গে মিলিয়ে পড়া হয়, সে ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন অর্থ ৩০ বছর বিবেচনা করতে হবে।
রায়ে আরও বলা হয়, তবে যদি কোনো ক্ষেত্রে আদালত যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু বা স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া সময় পর্যন্ত উল্লেখ করে দেন, সে ক্ষেত্রে এবং যুদ্ধপরাধীদের ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন ৩০ বছরের বিধান প্রযোজ্য হবে না।
ভার্চুয়াল আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্ত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আর আসামি পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আইনজীবী শিশির মনির।
এ রায়ের ব্যাপারে আইনজীবী মো. শিশির মনির বলেন, ‘বাংলাদেশ ফৌযদারি কার্যবিধি অনুযায়ী যাবজ্জীবন সাজা ৩০ বছর ধরে হিসাব করতে হবে। তবে কোনো ব্যক্তিকে যদি আদালত বা ট্রাইবুনাল আমৃত্যু কারাগারের আদেশ দিয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে তিনি কোনো রেয়াত বা বেনিফিট পাবেন না।’
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর আদালতে এ মামলার শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) হিসেবে মতামত তুলে ধরেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ, অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান ও আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন।
গত ১১ এপ্রিল ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদণ্ড’ এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ শুনানিতে ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ হবে কি না সে বিষয়ে আইনি মতামত তুলে ধরতে চার সিনিয়র আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) হিসেবে নিয়োগ দেন আদালত। এর আগে গত বছরের ১১ জুলাই রিভিউ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।
২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় দুই আসামি আতাউর মৃধা ওরফে আতাউর ও আনোয়ার হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে। এসব আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টের রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়।
হাইকোর্টের সে রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল আবেদন জানান। ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আদালত যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাসসহ সাত দফা অভিমত দেন। এরপর আপিলের ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।