পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আজ বলেছেন, নতুন করে রোহিঙ্গাদের স্রোত আসার আশঙ্কায় বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত বরাবর দেশের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করেছে। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী বেসামরিক নেত্রী অং সান সুকি-কে গ্রেফতার করার পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে এক বছরের জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি আজ তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা (সম্ভাব্য রোহিঙ্গাদের ¯্রােত ঠেকাতে) আমাদের সীমান্ত সুরক্ষিত করেছি।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, তবে মিয়ানমারের এই পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে ঢাকা আবারো রোহিঙ্গাদের স্রোত আসবে না বলেই মনে করছে।
তিনি আরো বলেন, ‘তবে, আমাদের কিছু বন্ধু-রাষ্ট্র আশঙ্কা করছে যে, (সেনাবাহিনী মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করায়) সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গারা রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসতে পারে।
মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার চলমান প্রক্রিয়ায় অগ্রগতির লক্ষ্যে ঢাকা মিয়ানমারের সাথে আলোচনা অব্যাহত রাখতে চায়।
গত ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের সচিব পর্যায়ের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর করার ব্যাপারে আরো আলোচনার জন্য ৪ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, আগামীকাল অনুষ্ঠিতব্য পূর্ব-নির্ধারিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকটি এখনো নিশ্চিত হয়নি। কারণ মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর ঢাকা দেশটির সাথে যাগাযোগ করতে পারেনি।
রাখাইন থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এদের অধিকাংশই মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরু হওয়ার পর ২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে এখানে এসেছে। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধনের প্রকৃষ্ট উদাহরণ’ এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনগুলো ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
গত তিন বছরে মিয়ানমার একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গারা তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আস্থা না থাকায়, দুই বার তাদের প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।