জাতীয় সংসদে পেশ করা অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ২০২১-২২ অর্থ-বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে চিন্তার সঙ্গে বরাদ্দের মিল দেখা যায়নি মনে করে,বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) । গত বছরের বাজেটে করোনা নিয়ে যে চিন্তা ও স্বচ্ছতার একটা দিক ছিল এবার সেটাও উপেক্ষিত হয়েছে। যদিও বলা হচ্ছে এবারের বাজেট জীবন-জীবিকার। বাজেটে ঘাটতির অর্থ পাওয়া নিয়েও প্রশ্ন সিপিডির। এছাড়া ঘোষিত বাজেটে স্বাস্থ্যখাতের জন্য দেয়া বরাদ্দকে যথেষ্ট মনে করছে না সংস্থাটি। বাজেটের সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো দুর্বল।
আজ রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ২০২১-২০২২ অর্থ-বছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে সিপিডির পর্যালোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। এসময় সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, স্বাস্থ্য, কৃষি ও কর্মসংস্থানে যে পরিমাণ বরাদ্দ দেয়ার কথা, প্রস্তাবিত বাজেটে তা দেয়া হয়নি। এছাড়া ‘বাজেট ঘাটতির অর্থ কোথা থেকে আসবে সেটা বড় প্রশ্ন।
বাজেটে অনুদান বাদ দিলে ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকায় দাঁড়ায়, যা জিডিপির ৬.২ শতাংশ। বৈদেশিক উৎস থেকে বাজেট ঘাটতি পূরণের বিষয়টি ইতিবাচক দিক। এটা আকাঙ্ক্ষিত। তবে ২০২০-২১ অর্থ-বছরের ১০ মাসের গতিপ্রকৃতি পর্যালোচনা করে পুরো অর্থবছর কেমন হতে যাচ্ছে, সে বিষয়টি মাথায় রেখে ২০২১-২২ অর্থ-বছরে সামষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে গতিপ্রকৃতি ঠিক করা হয়নি। আমরা এখানে দুর্বল অবস্থায় রয়েছি। রাজস্ব আহরণের বিষয়ে বাজেটে বলা হয়েছে, আগামী অর্থ-বছরে চলতি সংশোধিত বাজেটের তুলনায় রাজস্ব আহরণ ১০.০৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ঘাটতি বাজেটের অর্থায়ন রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে কতটুকু সম্ভব হবে, সে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ আছে। তবে সিপিডি পর্যালোচনায় দেখতে পায় রাজস্ব আহরণ ৩০.৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা সম্ভব।’
ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘বাজেটে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৯.৬ শতাংশ। বলা হচ্ছে, রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করা হবে। ব্যয় ঠিক করে আয়ের চিন্তাধারা থেকে এনবিআরের ওপর রাজস্ব আদায়ের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়। যা আসলে অর্জন করা সম্ভব হয় না।’