দিন যত যাচ্ছে করোনাভাইরাস ততো বেশি বিবর্তিত হচ্ছে। ফলে ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে এর উপসর্গও। বর্তমানে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বজুড়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দেখা গেছে, এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের যেসব উপসর্গ দেখা যাচ্ছে তা মহামারির প্রথম দিকে দেখা যায়নি। একটি মোবাইল অ্যাপলিকেশনের মাধ্যমে বৃটেনে কোভিড আক্রান্তদের নানা উপসর্গ সংগ্রহ করা হয়। সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এত দিন ধরে জানা কোভিডের উপসর্গ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পরার পর পরিবর্তিত হয়েছে। বৃটেনে এখন করোনার যে সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে তার বেশিরভাগের জন্যেই দায়ি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। তাই এই নতুন উপসর্গগুলো যে এই ভ্যারিয়েন্টেরই তা ধারণা করাই যায়।
করোনার সবথেকে সাধারণ উপসর্গ হচ্ছে জ্বর ও কাশি। এছাড়া কিছু মানুষের ক্ষেত্রে মাথা ব্যাথা ও গলা ব্যাথাও ছিল। আগে স্বাদ ও গন্ধ হারিয়ে যাওয়াও বেশ সাধারণ উপসর্গ হিসেবে বিবেচিত হতো। তবে এখন এটি ৯ নম্বরে চলে গেছে। অর্থাৎ, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর উপসর্গে পরিবর্তন আসছে। এর পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। ভ্যাকসিনের কারণে অনেকেই আর গুরুতরভাবে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন না। ফলে উপসর্গও আর আগের মতো নেই। আবার এটি হতে পারে ভাইরাসের বিবর্তনের ফলে। তবে এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না কেনো উপসর্গে পরিবর্তন আসছে। এখনো আমরা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে অনেক কিছুই জানি না। তারপরেও এসব উপসর্গ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। কারণ, আমরা যেটাকে হয় সাধারণ ঠান্ডা লাগা কিংবা গলা ব্যাথা ভাবছি, সেটা কোভিড-১৯ হতে পারে।
এরমধ্যে নতুন প্রশ্নের উদয় হয়েছে যে, ভ্যাকসিন কার্যক্রম কি ভাইরাসের উপসর্গ পাল্টে দিতে পারে কিনা! বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করেন যে, নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট ভ্যাকসিনের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। তবে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপারে দেখা গেছে চলমান ভ্যাকসিনগুলো এর বিরুদ্ধে বেশ ভাল সুরক্ষা প্রদান করে। ফাইজার ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার ক্ষেত্রে সফলার হার ৯০ শতাংশের বেশি। দক্ষিণ ওয়েলসের এক জন্মদিনের পার্টিতে ৩০ জন যোগ দিয়েছিল। তাদের মধ্যে ২৪ জনের করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ধরা পরে। তাদের কেউই ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি। বাকি ৬ জন যারা করোনা আক্রান্ত হননি তাদের সবাইই ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছিলেন।