আফগানিস্তানের ১১৬ জেলায় তালেবানের তাণ্ডবে ২৬০টি সরকারি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ভবন ধ্বংস এবং কিছু পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিফর্ম অ্যান্ড সিভিল সার্ভিস কমিশনের (আইএআরসিএসসি) চেয়ারম্যান আহমাদ নাদের নাদেরি বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান। খবর টোলো নিউজের।
আহমাদ নাদের বলেন, যেসব এলাকা সম্প্রতি তালেবান দখল করেছে, সেসব এলাকায় জরুরি সরকারি সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব এলাকায় সরকারি কর্মকর্তারা আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছেন। তাদের অধিকাংশ কর্মকর্তাকে প্রাদেশিক রাজধানীতে নিয়ে আসা হয়েছে নিরাপত্তার খাতিরে।
আইএআরসিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, তালেবান ১১৬ জেলার ২৬০টি সরকারি ভবন এবং সম্পদ ধ্বংস বা পুড়িয়ে দিয়েছে। এসব এলাকার প্রায় ১৩ মিলিয়ন (এক কোটি ৩০ লাখ) আফগান সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ৫০ হাজার সরকারি কর্মী।
যদিও তালেবানের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
নাদেরি বলেন, তালেবান যে পরিমাণ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, এতে সরকারের ক্ষতি প্রায় পাঁচশ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। তালেবানের হুমকির কারণে প্রায় চার হাজার সরকারি কর্মকর্তাকে তার কর্মস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
‘পাকতিয়া প্রদেশের যেসব জেলা তালেবানের দখলে সেখানে যেসব নারী গাইনোকোলজি বিভাগে কর্মরত, তারা কাজের অনুমতি পাচ্ছেন। তবে তাদের অবশ্যই হিজাব পরতে হচ্ছে এবং সঙ্গে রাখতে হচ্ছে অভিভাবককে’, যোগ করে নাদেরি।
অপরদিকে আফগান ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিউম্যান রাইটস কমিশন (এআইএইচআরসি) বলছে, গত কয়েক সপ্তাহে যেসব এলাকা তালেবান দখল করেছে, সেসব জায়গায় তারা বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বলে জানা গেছে।
সংস্থাটি জানায়, এসব বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে— ঘর থেকে যৌক্তিক কারণ এবং পুরুষ অভিভাবক ছাড়া নারীরা বের হতে পারবেন না, বালিকা বিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, পুরুষ অভিভাবক ছাড়া নারীদের চিকিৎসা দেওয়া বন্ধ থাকবে, বাধ্যতামূলক রাখতে হবে দাঁড়ি এবং পরতে হবে পাগড়ি।
নাদেরি বলেন, তালেবানের দখল এবং এসব বিধিনিষেধের কারণে ১৩ মিলিয়ন আফগান ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তালেবান এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের দখল করা এলাকায় সামাজিক সেবা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষিসংক্রান্ত সেবা এবং শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।