বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়ে সিএমএসএমই খাতের দ্বিতীয় দফায় প্রণোদনা ঋণের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। এই ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ। এর মধ্যে ৫ শতাংশ ভর্তুকি দেবে সরকার, বাকি ৪ শতাংশ গ্রাহক দেবেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, সিএমএসএমই খাতের যেসব উদ্যোক্তা গত ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রণোদনা ঋণ পেয়েছেন, তাঁরা কেউ এবার ঋণ পাবেন না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দ্বিতীয় দফায় ঋণ দিতে ইতিমধ্যে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ঋণ পেতে গ্রাহকদের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে যোগাযোগ করতে হবে।
জানা যায়, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়। শেষ পর্যন্ত বিতরণ হয় ১৫ হাজার কোটি টাকা। এই ঋণ পেয়েছেন ৯৫ হাজার ৭৩৩ জন গ্রাহক।
চলতি অর্থবছরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রণোদনা ঋণ দেবে আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড, ৩২০ কোটি টাকা। প্রণোদনার ঋণ এরপর বেশি দেবে লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স। প্রতিষ্ঠানটি চলতি অর্থবছরে দেবে ১৭০ কোটি টাকা। আইপিডিসি ফাইন্যান্স ঋণ দেবে ৮৫ কোটি টাকা, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স ৭০ কোটি টাকা ও অগ্রণী এসএমই ১০ কোটি টাকা।
লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্সের এসএমই বিভাগের প্রধান কামরুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত অর্থবছরে ১ হাজার ৪০০ গ্রাহককে আমরা ১৪০ কোটি টাকা প্রণোদনার ঋণ দিয়েছি। ঋণ দিতে আমাদের ২৭টি শাখার পাশাপাশি ৩৭ জেলায় কর্মকর্তারা কাজ করছেন। আমরা নতুন গ্রাহক খুঁজছি। একজন গ্রাহককে দ্বিতীয় দফায় ঋণ দিতে না পারার শর্ত এবার বিতরণে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখা দিতে পারে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, গত অর্থবছরে যাঁরা প্রণোদনার ঋণ ভালোমতো বিতরণ করেছে, এবার তারাই ঋণ দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। পাশাপাশি যাদের যত ঋণ, সেভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ঋণ বিতরণ দিতে শর্ত শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তারা শুধু চলতি মূলধন নিতে পারতেন। এখন তাঁরা মেয়াদি ঋণও নিতে পারবেন। পাশাপাশি কোন ব্যাংক কত টাকা দিতে পারবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেই সীমাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। কম সুদের এই ঋণ কারা পাবেন, তার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।