মোহাম্মাদ মানিক হোসেন চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি ঃ
দিনাজপুর চিরিরবন্দরে এক নামে দুই প্রতিষ্ঠান উপজেলা জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের পশ্চিম নশরতপুর বারঘড়ি পাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নশরতপুর বারঘুড়ি বটতলা নামের পাশাপাশি একই স্থানে একই নামে গড়ে উঠেছে দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই দুই গ্রামের ৮শিক্ষক ও দুই বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির রশি টানাটানিতে পশ্চিম নশরতপুর বারঘড়ি পাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি হারিয়ে ফেলছে তার জন্ম ইতিহাস ও প্রতিষ্ঠাকালীন অস্তিত্ব। আর ভুঁয়া ব্যবস্থাপনা কমিটির নকল কাগজের দাপটে চাকুরী হারাতে বসেছে এ বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাকালীন ৪ শিক্ষক।
সরেজমিন ঘুরে জানাগেছে, খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের চন্ডিপাড়া গ্রামের বারঘুড়ি এলাকার শামসুদ্দিন নামের এক শিক্ষানুরাগী তার স্বত্ব ভোগদখলীয় ৩৩ শতাংশ জমি তার দুই ভাইসহ দান করে সেখানে ২০০৩ সালে গড়ে তোলেন চিরিরবন্দর নশরতপুর ইউনিয়নে পশ্চিম নশরতপুর বারঘড়ি পাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৫২ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষই ছিল শামসুদ্দিনের বাড়ীর আশপাশের ভাবকী,নশরতপুর ও তেতুঁলিয়া শাহাপাড়া এলাকার কোমলমতি শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেয়া। তখন বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন শামসুদ্দিন নিজেই। সভাপতি শামসুদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, আমি জমি দাতা ও স্কুল উদ্যোগতা হলেও আমাকে বাদ দিয়ে আমার স্কুলের নামে রেজিষ্টাড কৃত জমির কাগজপত্র দিয়ে নির্মান করা হয়েছে একই ধরনের আরেকটি স্কুল। আমি আমার স্কুলের অনুমতি প্রেরণের যাবতীয় কাগজপত্র প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দাখিল সর্ম্পকে নিজে বুঝতে না পারলে নিয়ে যাইআমার চাচাতো ছোট ভাই আব্দুল হাইর কাছে । আব্দুল হাই কাগজপত্র ভালো করে বুঝে নেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে সকল কাগজের ফটোকপি হাতে নেয়। পরে বিদ্যালয়টি শিক্ষক নিয়োগের বিভিন্ন লোভ লালসার রশানলে পড়ে আমাকে বাদ দিয়েই কৌশলগত ভাবে আব্দুল হাই শিক্ষক নিয়োগ দ্বন্ড কলহে জড়িয়ে পড়ে আমার সাথে। পরে আমার দানকৃত জমি যার দাগ নং-৪১৩ খতিয়ান নং- ১৩৬৯ দলিল নং- ৮২৯৪/০৩ কাগজপত্রাধির হুবহু নকল কপি দিয়েস্কুল অনুমতির প্রেরণের কাগজপত্র আমার আগে জমা করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে। এর পরেই ২০১৪ সালেএকই ইউনিয়নের বটতলা রাস্তার ধারেরণজীত কুমারের জমিতে নতুন একটি গৃহ নির্মাণ করে গৃহটিতে পশ্চিম নশরতপুর বারঘড়ি পাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত-২০০৩ সাল একটি সাইন বোর্ড লাগায়।আর সেই সময় থেকেই বারঘুড়ি গ্রামে এক নামে দুই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে নশরতপুর ইউনিয়নের বারঘুড়ি গ্রামেপশ্চিম নশরতপুর বারঘড়ি পাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের দুটি বিদ্যালয়ে পাঠদান চললেও কোনটি আসল বিদ্যালয় আর কোনটি নকল বিদ্যালয় এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন চলছে। বিদ্যালয়টি হারিয়ে ফেলতে বসেছে তার জন্ম ইতিহাস ও প্রতিষ্ঠাকালীন অস্তিত্ব এবং ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নশরতপুর ভাবকী ইউনিয়নের এলাকাবাসী। এ বিষয়ে ওই স্কুলের বিকল্প সভাপতি ও কাচীনিয়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হাইর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, স্কুল প্রতিষ্টার জন্য শামসুদ্দিনের কাছ থেকে কাগজপত্র নিয়ে আমি সবকিছই করি। তবে শামসুদ্দিন জমিদাতা ও স্কুল উদ্যোগতা হলেও তাকে একটা পোষ্টটের বেশী একাধিক কোন পোষ্ট না দেওয়ায় সে আমার সাথে দন্ডে জড়িয়ে পড়ে। পরে আমি নিজেই অন্য জমিতে আরেকটি স্কুল নির্মান করি।
এ ব্যাপারে চিরিরবন্দর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো: শাহাদাত হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, একই নামে দুই স্কুল পশ্চিম নশরতপুর বারঘড়ি পাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নিয়ে দু’গ্র“পের মাঝে দীর্ঘদিন যাবত দ্বন্ড চলছে। তবে প্রতিষ্ঠাকালীন বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো: শামসুদ্দিন জমিদাতা ও স্কুল উদ্যোগতা আমি আমার প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করেছি। তবে আবার পুনরায়যাচাই বাছাই করে প্রকৃত জমিদাতা ও স্কুল উদ্যোগতাকে নির্বাচন করেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রালয়কে বিষয়টি অবহিত করা হবে।