বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে। সম্প্রতি বন্যায় ২৮টি সরকারি প্রাথমিক ও দুটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়েছে।
মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা আশা করছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বন্যার পানি নেমে যাবে। অন্যথায় পরিচালনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে পাশের উঁচু জমি বা ভবনে ক্লাস নেওয়া হবে। ক্লাস নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা ও ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা চলছে।
বগুড়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, এ জেলায় তালিকাভুক্ত মোট ৮৬২টি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে উচ্চ বিদ্যালয় ৪৩৯টি, কলেজ ৮২টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ২৮টি এবং মাদ্রাসা ৩১৩টি। এর বাইরেও বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। করোনাকাল গত দেড় বছরে জেলার কোথাও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হয়নি।
তবে সম্প্রতি বন্যায় সারিয়াকান্দি উপজেলার দেবডাঙ্গা আমিনা জাহান উচ্চ বিদ্যালয় ও কর্ণিবাড়ির নিজাম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় বন্যাকবলিত হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়া ও উজানের ঢল না আসায় বর্তমানে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে স্কুল দুটি বন্যামুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কোনো কারণে না হলে পাশের ভবনে ক্লাস নেওয়া হবে।
বগুড়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হযরত আলী ও সারিয়াকান্দি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম শহিদুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি বন্যায় সারিয়াকান্দি উপজেলায় দুটি প্রতিষ্ঠানে পানি উঠে। সরকার আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নির্দেশনাকে সামনে রেখে বিদ্যালয়গুলো পরিষ্কার করার কাজ চলছে।
এ ব্যাপারে তিনি (জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। গত দুই দিন তিনি নিজেও ১৫-২০টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন।
বগুড়া সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (এডিপিইও) জাবেদ আকতার ও সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম কবির জানান, জেলার ১২ উপজেলায় মোট এক হাজার ৩৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। গত দেড় বছরের করোনাকালে সারিয়াকান্দিতে বন্যা ও নদীভাঙনে চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিলুপ্ত হয়েছে।
বিলুপ্ত মানিকদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাছিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আউচারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ভাঙ্গুরগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পার্শ্ববর্তী প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর আগেও ভাঙ্গুরগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়। এবার নতুন ভবনটিও বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান, এবারের বন্যায় সারিয়াকান্দি উপজেলায় ২৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বন্যার পানি নামতে শুরু করায় আশা করা হচ্ছে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে স্বভাবিক হয়ে যাবে। আর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সেখানে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হবে। কোনো কারণে সম্ভব না হলে স্কুল পরিচালনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে পাশের ভবনে বা উঁচু স্থানে ক্লাস নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে সব প্রস্তুতি চলছে।