নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যম ব্যবহার করে কিডনি কেনাবেচার ফাঁদ পেতে বসেছে চক্রটি। চক্রের সদস্যরা প্রথমে কিডনির গ্রাহক ও দাতাদের (ডোনার) নানা প্রলোভনে রাজি করায়। প্রতিটি কিডনির জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে তারা হাতিয়ে নেয় ১৫-২০ লাখ টাকা। কিন্তু দাতার হাতে ওঠে মাত্র ২ লাখ টাকা। বাকিটা চক্রের সদস্যরা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়।
চক্রটি গত কয়েক বছর এভাবে দেশ থেকে শতাধিক কিডনিদাতাকে ভারতে নিয়ে গিয়ে তাদের অঙ্গ বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছে। এ চক্রের পাঁচ সদস্য শেষমেশ র্যাবের জালে আটকা পড়েছে। সোমবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত রাজধানীর নর্দা এবং জয়পুরহাটে অভিযান চালিয়ে র্যাব-৫, র্যাব-২ ও র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা তাদের গ্রেপ্তার করেন। তারা হলেন চক্রের মূলহোতা শাহরিয়ার ইমরান, মেহেদী হাসান, সাইফুল ইসলাম, আবদুল মান্নান ও তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু।
গতকাল র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এ চক্রের সদস্য ১৫-২০ জন। তারা তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে কাজ করে। একটি অংশ ঢাকায় অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিডনির গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ
করে। আরেকটি অংশ কিডনির জন্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব মানুষদের চিহ্নিত করে। তাদের মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে ঢাকায় আনা হয়। আর চক্রের আরেকটি অংশের কাজ হলো কিডনির দাতা-গ্রহীতার ‘ব্লাডম্যাচিং’সহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করা। এর পর ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে দাতাকে ভারতে পাঠানো হয়। ভারতেও একটি চক্র আছে, যারা এ দেশের চক্রটিকে সহায়তা করে।
শাহরিয়ার ইমরান সম্পর্কে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, তিনি এখন পর্যন্ত কিডনি বিক্রির জন্য শতাধিক মানুষকে ভারতে পাঠিয়েছেন। গ্রেপ্তার আবদুল মান্নানের কাজ হলো নানা প্রলোভনে গরিব মানুষকে কিডনি বিক্রিতে রাজি করানো। এ অভিযোগে তিনি আগেও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে অন্তত ছয়টি মামলা রয়েছে।