এ পর্যন্ত শোবিজ অঙ্গনে বহু নারী তারকা অভিনয় করেছেন। তাদের কেউ বড় পর্দায়, কেউ ছোট পর্দায় কেউবা গানের জগতে। তবে নাটক বা সিনেমার পাশাপাশি চরিত্রও বদল করেছেন অনেকেই। আজ আপনাদের জানাবো এসব তারকাদের একাধিক বিয়ের কাহিনী।
রুনা লায়লা:
উপমহাদেশের প্রখ্যাত এ সংগীতশিল্পী এ পর্যন্ত তিনবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। তার প্রথম বিয়ে খাজা জাভেদ কায়সার নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। দ্বিতীয় বিয়ে করেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক রন ড্যানিয়েলকে। সর্বশেষ তিনি ঘর বাঁধেন বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান নায়ক আলমগীরের সঙ্গে।
সাবিনা ইয়াসমিন:
বাংলাদেশের সংগীতের আরেক কিংবদন্তি সাবিনা ইয়াসমিন প্রথমে বিয়ে করেছিলেন এক ব্যাংক ম্যানেজারকে। সেই সংসারে তাদের একটি মেয়ে রয়েছে। বেশিদিন টেকেনি সে সংসার। এরপর গায়িকা বিয়ে করেন কলকাতার গায়ক সুমন চট্টোপাধ্যায়কে। যিনি পরে ধর্মান্তর হয়ে কবির সুমন নাম ধারণ করেন।
সামিনা চৌধুরী:
এই শিল্পী প্রথমে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন গায়ক, সুরকার ও সংগীত পরিচালক নকীব খানকে। মতের মিল না হওয়ায় ভেঙে যায় সে সংসার। পরে সামিনা চৌধুরী বিয়ে করেন অনুষ্ঠান নির্মাতা এজাজ খান স্বপনকে।
কবরী সারোয়ার:
এক সময়ের মিষ্টি নায়িকা কবরীর মাত্র ১৫ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল প্রযোজক চিত্ত ঘোষের সঙ্গে। বেশিদিন স্থায়ী হয়নি সে সংসার। ১৯৭৮ সালে নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী শামীম ওসমানের চাচা বাবু সারোয়ারকে বিয়ে করেন নায়িকা। ৩০ বছর ঘর করার পর নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে দ্বন্দ্বে ২০০৮ সালে কবরীকে তালাক দেন বাবু সারোয়ার।
পারভীন সুলতানা দিতি:
প্রয়াত এ নায়িকা প্রথমে নায়ক সোহেল চৌধুরীকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। এ দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর দিতি বিয়ে করেন জনপ্রিয় নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে। সে সংসারও টেকেনি। দীর্ঘদিন একা থাকার পর ২০১৬ সালে ক্যানসারে মারা যান দিতি।
সুবর্ণা মুস্তাফা:
১৯৮৪ সালে কিংবদন্তি খল অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদীকে বিয়ে করেন সুবর্ণা মুস্তাফা। ২৪ বছর সংসার করেন তারা। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০০৮ সালে হুমায়ুন ফরিদীকে ডিভোর্স দেন সুবর্ণা। এরপর তিনি বিয়ে করেন নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদকে। সুর্বণার চেয়ে ১৪ বছরের ছোট সৌদ। তার সঙ্গেই বর্তমানে ঘর করছেন।
সূচরিতা:
এই নায়িকা প্রথমে বিয়ে করেছিলেন বাংলাদেশের প্রথম অ্যাকশন হিরো নায়ক জসিমকে। অল্প কিছুদিন সংসার করেছিলেন তারা। জসিমের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর সূচরিতা বিয়ে করেন প্রযোজক কে এম আর মঞ্জুরকে।
শমী কায়সার:
১৯৯৯ সালে কলকাতার চিত্রনির্মাতা রিঙ্গোকে বিয়ে করেন শমী কায়সার। দুই বছর টিকেছিল সে সংসার। এরপর শমী বিয়ে করেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনীতিক মোহাম্মদ এ. আরাফাতকে। বর্তমানে তার সঙ্গেই সংসার করছেন ছোট পর্দার একসময়ের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
তাজিন আহমেদ:
এই অভিনেত্রী প্রথমে বিয়ে করেছিলেন নাট্য পরিচালক এজাজ মুন্নাকে। টেকেনি সে সংসার। এজাজ মুন্নার বিরুদ্ধে তাজিন নেশাগ্রস্ত ও পরকীয়ার অভিযোগ তুলে ডিভোর্স দিয়েছিলেন। এরপর তাজিন বিয়ে করেন এক মিউজিশিয়ানকে (নাম জানা যায়নি)।
বিজরী বরকত উল্লাহ:
ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন অভিনেত্রী বিজরী বরকত উল্লাহ ও সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন। তাদের ঘরে আসে ফুটফুটে এক কন্যাসন্তান। বেশি দিন স্থায়ী হয়নি সে সংসার। ইমনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বিজরী বিয়ে করেন অভিনেতা ইন্তেখাব দিনারকে।
ডলি সায়ন্তনী:
এক সময়ে জনপ্রিয় এই গায়িকা প্রথমে বিয়ে করেন বিশিষ্ট গীতিকার রিজভীকে। সেই ঘরে ডলির দুটি কন্যাসন্তান। তারপরও সংসার টেকেনি। এরপর ডলি বিয়ে করেন গায়ক রবি চৌধুরীকে। টেকেনি সে সংসারও। বর্তমানে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে ঘর করছেন গায়িকা।
অপি করিম:
২০০৭ সালে জাপান প্রবাসী কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার তাসির আহমেদকে বিয়ে করেন অপি। বছর না গড়াতেই ভেঙে যায় তাদের সংসার। এরপর অপি প্রেম করে বিয়ে করেন নাট্যনির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বলকে। দ্বিতীয় সংসারকেও বিদায় জানিয়ে আপাতত সিঙ্গেল অপি করিম।
সাদিয়া জাহান প্রভা:
সমালোচিত মডেল ও অভিনেত্রী প্রভার প্রথম বিয়ে হয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বর সঙ্গে। বিয়ের পর সাবেক প্রেমিক রাজিবের সঙ্গে করা কয়েকটি পর্ন ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে প্রভাকে তালাক দেন অপূর্ব। পরে মাহমুদ শান্ত নামে এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন প্রভা। বিয়ে করে সংসারী হন অপূর্বও।
নওশীন নেহরিন মৌ:
এই অভিনেত্রী মিডিয়ায় কাজ শুরু করার আগেই একবার বিয়ে করেছিলেন। টেকেনি সে সংসার। অভিনয়ে আসার পর নওশীন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অভিনেতা হিল্লোরের সঙ্গে। একপর্যায়ে হিল্লোল তার প্রথম স্ত্রী অভিনেত্রী তিন্নিকে ডিভোর্স দিয়ে বিয়ে করেন নওশীনকে।
সুজানা জাফর:
মডেল ও অভিনেত্রী সুজানা ২০০৬ সালে প্রথম বিয়ে করেন একটি বায়িং হাউজের কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদকে। চার মাসের মাথায় ভাঙে সে সংসার। এরপর তিনি ২০১৫ সালে নিজের থেকে সাত বছরের ছোট গায়ক হৃদয় খানকে বিয়ে করেন। মাত্র চার মাস পরে ভাঙে সে সংসারও।
নাদিয়া হোসেন:
২০০৮ সালে অভিনেত্রী নাদিয়া বিয়ে করেন অভিনেতা মনির খান শিমুলকে। পাঁচ বছর পর তারা আলাদা থাকতে শুরু করেন। ২০১৫ সালে হয় ডিভোর্স। এরপর ২০১৬ সালে নাদিয়া বিয়ে করেন অভিনেতা নাঈমকে। বর্তমানে তার সঙ্গেই সংসার করছেন।
নায়িকা ময়ূরী:
২০০৯ সালে ময়ূরী টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মিলনকে বিয়ে করেন। ২০১৫ সালে মিলন মারা যান। এরপর তিনি শ্রাবণ শাহ নামে এক অভিনেতাকে বিয়ে করেন। কিছুদিনের মধ্যে ভাঙে সে ঘর। এরপর ২০১৭ সালে শফিক জুয়েল নামে এক মাদ্রাসাশিক্ষককে বিয়ে করেন ময়ূরী। বর্তমানে টঙ্গীতে তার সঙ্গেই সংসার করছেন নায়িকা।
নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি:
২০০৬ সালে গায়িকা ন্যান্সি বিয়ে করেন ব্যবসায়ী আবু সাঈদ সৌরভকে। ২০১২ সালে তাদের সংসারজীবনের ইতি ঘটে। পরে ২০১৩ সালে ন্যান্সি নাজিমুজ্জামান জায়েদ নামে একজনকে বিয়ে করেন। জায়েদ ময়মনসিংহ পৌরসভায় চাকরি করছেন, পাশাপাশি ব্যবসায়ী।