নিজস্ব প্রতিবেদক
১১ অক্টোবর থেকে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের ছয় দিনব্যাপী যৌথ বার্ষিক সভা চলছে। গতবারের মতো এবারও অনলাইনে এই সভা হচ্ছে। সেখানে গত শুক্রবার (ওয়াশিংটন সময়) উন্নয়ন কমিটির ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। এতে বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বিবেচনায় উন্নয়ন কার্যক্রম বিশ্লেষণ করা হয়। এবার করোনার কারণে এটির গুরুত্ব বেড়েছে।
করোনায় বাংলাদেশের কর্মসংস্থানের ওপর বেশ প্রভাব পড়েছে। ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। করোনার কারণে অর্থনীতিতে শ্লথগতি দেখা দেওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি ভুগেছেন। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের হিসাবে, দারিদ্র্যের হার ৩৫ থেকে ৪৩ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে। সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক গবেষণা বলছে, করোনার কারণে দেড় কোটির বেশি মানুষ নতুন করে গরিব হয়েছেন।
করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সরকারি বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ায় আবার অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে। ফলে আবারও দারিদ্র্যসীমার ওপরে বহু মানুষ উঠেছে। তবে এখনো আগের অবস্থায় ফিরে যায়নি।
করোনার প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বের সামনে দুটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক। সংস্থা দুটি বলছে, অতিমারির কারণে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) দুটি লক্ষ্য অর্জনের গতি বিপরীতমুখী হচ্ছে। লক্ষ্য দুটি হলো দারিদ্র্য বিমোচন ও সুষমভাবে সমৃদ্ধি (সবার উন্নয়ন সমভাবে হবে)। বাংলাদেশে একদিকে দারিদ্র্য বিমোচনের গতি কমেছে, অন্যদিকে কোটি টাকার ব্যাংক হিসাব বেড়েছে। এর মানে, বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে, সুষম সমৃদ্ধি হচ্ছে না।
বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া চলছে, সেটাকে ‘অসম’ বলে উল্লেখ করেছে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক। কারণ, করোনা অতিমারির ফলে এই পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় অনিশ্চয়তা আছে। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এখনো করোনার প্রাদুর্ভাব বেশি। নতুন নতুন করোনার ধরন পাওয়া যাচ্ছে। টিকা দেওয়ার গতিও কম। সার্বিকভাবে এসব দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার করোনার আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারেনি, বরং ক্রমশ আরও পিছিয়ে যাচ্ছে।
১২ অক্টোবর প্রকাশিত আইমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বড় অর্থনীতির দেশগুলো আগামী বছর নাগাদ প্রাক্-মহামারি পর্যায়ে ফিরে যাবে। আর উন্নয়নশীল দেশগুলো ২০২৪ সালের আগে করোনার আগের অবস্থায় যেতে পারবে না।