বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে জনপ্রিয় চীনা ব্র্যান্ড শাওমির স্মার্টফোন সংযোজন কারখানা।
রাজধানীর বনানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এছাড়া তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এ সময়ে ভিডিওবার্তার মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানান।
কোনো তৃতীয়পক্ষের সম্পৃক্ততা ছাড়াই সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) মাধ্যমে গাজীপুরে স্মার্টফোন সংযোজন কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করছে শাওমি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী জানান, শাওমি বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড। বাংলাদেশের কারখানাতেও ভারত, চীন ও ভিয়েতনামে উৎপাদিত স্মার্টফোনের মতোই একই মানসম্পন্ন স্মার্টফোন তৈরি হবে। এ জন্য ৮৫ কোটি ৪০লাখ টাকারও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ পরিকল্পনা রয়েছে। ধাপে ধাপে এক হাজারের বেশি কর্মসংস্থান হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘শুধু স্মার্টফোন নয়, সব ধরনের প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশকে হাব বানান। এখান থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করুন।’
শাওমি বাংলাদেশের ৯৯% কর্মী বাংলাদেশি- এমন তথ্য জেনে প্রতিষ্ঠানটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে স্মার্টফোনের ৯৪টি খুচরা যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক ১%-এ নামিয়ে আনা হয়। বর্তমানে ১৫৪টি খুচরা যন্ত্রাংশে আমদানি শুল্ক ১%। সেজন্যই দেশে একের পর এক স্মার্টফোন সংযোজন কারখানা হচ্ছে। দেশের বাজারে বছরে চার কোটি মুঠোফোনের চাহিদা রয়েছে। তার মধ্যে ৭০%-ই বাংলাদেশে উৎপাদিত হচ্ছে।
ওয়ালটন স্থানীয়ভাবে ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন শুরুর মাধ্যমে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন শুরু হয়।
পরবর্তীতে সেলফোন জায়ান্ট স্যামসাংয়ের পাশাপাশি সিম্ফনি এবং অন্যান্য ব্র্যান্ডও দেশে মোবাইল হ্যান্ডসেটের উৎপাদন শুরু করে।
দেশে এই ব্র্যান্ডগুলর স্মার্টফোন এবং ফিচার ফোনের চাহিদা ৫৫%।
সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, দেশে চাহিদার প্রায় ৮২% স্মার্টফোন তৈরি হয়।
সরকার এখন পর্যন্ত ১৩টি কোম্পানিকে দেশে মোবাইল হ্যান্ডসেটের উৎপাদন শুরু করার জন্য লাইসেন্স দিয়েছে। এমনকি নকিয়াও বাংলাদেশে সংযোজন কারখানা স্থাপনের জন্য প্রস্তুত।
২০২০ সালে সারাদেশে প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ ইউনিট ফোন বিক্রি হয়েছিল যার মধ্যে ৯০ লাখই ছিল স্মার্টফোন।
বাংলাদেশ মোবাইল ফোন আমদানিকারক সমিতির (বিএমপিআই) যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিনের মতে, ২০২১ সালের মাঝামাঝি প্রায় ৭৫ লাখ সেলফোন বিক্রি হয়, যার মধ্যে ২০ লাখ স্মার্টফোন ছিল।
বিশেষজ্ঞরা এই বছর ১ কোটি ২০ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন বিক্রির লক্ষ্য নিয়ে সর্বমোট ৩ কোটি ২০ লাখ সেলফোন বিক্রির আভাস দিয়েছেন