অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ গৃহীত উদ্যোগ ও কৌশল স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য অনুকরণীয় মডেল হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৭.২৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বর্তমানে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.৭ শতাংশ উল্লেখ করে তিনি ইস্তাম্বুল কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সম্মিলিত প্রয়াস জোরদারের পরামর্শ দেন।
অস্ট্রিয়া সফররত শিল্পমন্ত্রী আজ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মন্ত্রী পর্যায়ের ৭ম সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে এ মন্তব্য করেন। ভিয়েনা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে দু’দিনব্যাপী এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সম্মেলন উপলক্ষে উদ্বোধনী দিনে “বিশ্ব অংশীদারিত্ব সৃষ্টি : স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের প্রসার (ইঁরষফরহম এষড়নধষ চধৎঃহবৎংযরঢ়ং: ঊহযধহপরহম মৎড়ঃিয ধহফ রহপষঁংরাবহবংং রহ খউঈং)” শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
জাতিসংঘ শিল্পোন্নয়ন সংস্থার (ইউনিডো) মহাপরিচালক লি ইয়ং (খও ণড়হম) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশ, ল্যান্ডলক উন্নয়নশীল দেশ ও ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী অফিসের (ইউএন-ওএইচআরএলএলএস/টঘ-ঙঐজখখঝ) উপমহাসচিব ফেকিটমোলোয়া কাটোয়া (ঋবশরঃধসড়বষড়ধ কধঃড়ধ), জাতিসংঘের ভিয়েতনাম অফিসের (টঘঙঠ) মহাপরিচালক ইউরি ফেডোভ (ণঁৎর ঋবফড়ঃড়া), অস্ট্রিলিয়ান ফেডারেল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক পিটার লোনস্কি (চবঃবৎ খধঁহংশু), ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ঙঋওউ) এর মহাপরিচালক সুলেইমান জে আল-হার্বিশ (ঝঁষবরসধহ ঔ অষ-ঐবৎনরংয) বক্তব্য রাখেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, শিল্পখাতে উন্নয়নের পাশাপাশি স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উৎপাদিত পণ্য বিপণনের জন্য আন্তর্জাতিক বাজার সুবিধা (ওহঃবৎহধঃরড়হধষ গধৎশবঃ অপপবংং ভড়ৎ খউঈং) সম্প্রসারণ করতে হবে। এর মাধ্যমে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোতে শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি ও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে ২০২০ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর রপ্তানির পরিমাণ দ্বিগুণ করার লক্ষ্য থাকলেও এখন পর্যন্ত এলডিসিভুক্ত দেশগুলো বিশ্বরপ্তানি বাণিজ্যের মাত্র ০.৯৪ শতাংশে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে। ২০১৬ সালে এলডিসিভুক্ত দেশগুলো ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি ঘাটতি মোকাবিলা করেছে। এ ঘাটতি মোকাবিলায় তিনি উন্নত দেশগুলোতে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর উৎপাদিত সকল পণ্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদি শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা বাস্তবায়নের তাগিদ দেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধি জোরদারে বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিখাতে ব্যয় বাড়ানো প্রয়োজন। উন্নত দেশগুলো শিল্পখাতের উন্নয়ন ও গবেষণায় যেখানে মোট জিডিপির ২ শতাংশ ব্যয় করছে, সেখানে এখাতে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর ব্যয় মাত্র ০.১ শতাংশ। তিনি ইউনিডোর ‘জ্ঞান সহায়তা (কহড়ষিবফমব অরফ)’ কর্মসূচির আওতায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য নতুন স্থাপিত ‘টেকনোলজি ব্যাংক (ঞবপযহড়ষড়মু ইধহশ)’ সমৃদ্ধকরণে উন্নত দেশ, উন্নয়ন সহযোগী, বেসরকারিখাত, শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবদান রাখার আহ্বান জানান।
#