বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় মর্যাদাশীল করাই আমাদের প্রত্যয়: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় মর্যাদাশীল করাই আমাদের প্রত্যয়: প্রধানমন্ত্রী

তারুণ্যদীপ্ত বাংলাদেশ সব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলারূপে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গতকাল জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনার জন্য সাধারণ প্রস্তাব উপস্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল বিকালে সংসদ নেতা শেখ হাসিনার এ প্রস্তাবের পর সংসদের কার্যপ্রণালি বিধির ১৪৭ বিধিতে আনা এ প্রস্তাবের ওপর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বিশেষ আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচনায় সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা অংশ নেবেন। সূত্র: বিডি নিউজ

আজ বৃহস্পতিবার বিশেষ আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি কণ্ঠভোটে পাসের জন্য উপস্থাপন করা হবে। অতীতের রেওয়াজ অনুযায়ী বিশেষ আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতক্রমে গৃহীত হতে পারে।

গতকাল সংসদের বৈঠকের শুরুতে স্মারক বক্তৃতা দেন রাষ্ট্রপতি। এরপর অধিবেশন কিছু সময়ের জন্য মুলতবি করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। পরে সংসদের বৈঠক শুরু হলে প্রস্তাব তোলেন সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের এ ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণে তারুণ্যদীপ্ত বাংলাদেশ সব চ্যালেঞ্জে উত্তরণ ঘটিয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, শোষণ ও বৈষম্যহীন, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ-জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলারূপে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হোক এই হোক আমাদের প্রত্যয়।’

বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী সাড়ম্বরে উদযাপনে গত বছরকে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করে নানা কর্মসূচি নিয়েছিল সরকার। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে কর্মসূচিগুলো যথাযথভাবে করতে না পারায় মুজিববর্ষের মেয়াদ ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

চলতি বছর ২৬ মার্চ বাংলাদেশ উদযাপন করেছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করবে বাংলাদেশ।

সংসদে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ১৪৭ বিধির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘‘সংসদের অভিমত এই যে, ২০২১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন বাঙালির জাতীয় জীবনে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশ আজ এক ‘উন্নয়ন বিস্ময়’।’’

প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব উপস্থাপনকালে বলেন, ‘১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবার জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ প্রদান করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নকালে, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ জাতীয় জীবনে নেমে আসে অমানিশার ঘোর অন্ধকার। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।’

প্রস্তাবে বলা হয়, ‘২০০৮ সালের ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তবতা। দারিদ্র্য হ্রাস, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, সারাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন, গৃহহীন ৯ লাখ মানুষকে ঘর তৈরি করে দেয়া, সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম, নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু রোধসহ মানবসম্পদ উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা অর্জিত হয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, রেমিট্যান্স, রিজার্ভ প্রতিটি সূচকে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান ৪১তম। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার লক্ষ্যে বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ প্রণয়ন করা হয়েছে।’

রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতির বক্তব্য সংসদের এ আলোচনাকে গৌরবান্বিত করেছে।’

জাতীয়