৩ দিনের সফরে আগামী ১৫ই ডিসেম্বর ঢাকা আসছেন ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ। আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রেসিডেন্টের সফরের বিষয়টি সোমবার নিশ্চিত করেছে দিল্লির বিদেশ মন্ত্রক। বিজ্ঞপ্তি মতে, বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের আমন্ত্রণে আগামী ১৫-১৭ই ডিসেম্বর বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফর করবেন প্রেসিডেন্ট কোবিন্দ। ১৫ই ডিসেম্বর তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন। ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তার এই সফর। একই বছর ভারতের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর এই প্রথম। তাছাড়া ভারতের প্রেসিডেন্ট হিসেবে রামনাথ কোবিন্দের এটি প্রথম বাংলাদেশ সফর হবে। বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকায় ভারতের প্রেসিডেন্ট সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, বিজয় দিবসের প্যারেড ও সংসদের দক্ষিণ প্লাজার অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। তাছাড়া প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন প্রেসিডেন্ট কোবিন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়া ভারতের প্রেসিডেন্টের সম্মানে প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ স্টেট ব্যানকুয়েটের আয়োজন করবেন। তিনি সফর সঙ্গীদের নিয়ে তাতে অংশ নিবেন। উল্লেখ্য, গত মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৫ রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান।
বিদেশ সচিব আসছেন আজ: এদিকে ভারতের প্রেসিডেন্টের আসন্ন বাংলাদেশ সফরের আলোচ্যসূচি চূড়ান্ত করতে আজ ঢাকা আসছেন দিল্লির বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। দুইদিনের সফরে তিনি পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। ওই দিন বিকালে তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পরদিন ফিরে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। শ্রিংলার সফর বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, দুই দেশের মধ্যে যত যোগাযোগ বাড়বে তত ভালো। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য এ বছরের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় এসেছিলেন এবং এবারের ১৬ই ডিসেম্বর ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ ঢাকায় আসছেন। কী নিয়ে আলোচনা হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে দুই পররাষ্ট্র সচিবের মধ্যে ফোনালাপে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ঢাকা আসার আগ্রহ ব্যক্ত করলে সানন্দে রাজি হন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, গত মার্চে আমরা অনেকগুলো বিষয়ে একমত হয়েছিলাম, কিন্তু কোভিডের কারণে বেশিদূর অগ্রসর হওয়া সম্ভব হয়নি। এবারে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়গুলো দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ থাকবে ঢাকার পক্ষ থেকে। কী কী বিষয়ে তাগিদ থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কুশিয়ারা নদী, কোভিড টিকা সরবরাহ, বাণিজ্য বৈষম্যসহ অন্যান্য পেন্ডিং ইস্যু নিয়ে কথা হবে। ভারতের পক্ষ থেকে জোরালো কোনো প্রস্তাব আছে কিনা জানতে চাইলে, তিনি বলেন, ‘ভারত বায়োটেকের’ উদ্ভাবিত টিকার স্বীকৃতি চাইছে দিল্লি এবং আমরা এ বিষয়ে নীতিগতভাবে রাজি, কারণ ইতিমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে ওই টিকা। সাধারণত আনুষ্ঠানিক বৈঠক দুই টেবিলে বসে প্রতিনিধিদল করে থাকে, কিন্তু এবারে দুই পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠক সোফা ফরম্যাটে হবে। উল্লেখ্য, ভারতের প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফর প্রস্তুতি এবং নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনায় এরইমধ্যে দিল্লির একটি অ্যাডভান্সড টিম ঢাকা সফর করে গেছে।