বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে হত্যার অভিযোগ, স্বামী গ্রেপ্তার

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে হত্যার অভিযোগ, স্বামী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের ছাত্রী মাহমুদা খানম আঁখি (২১)। আনিসুল ইসলামের (৩২) সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর ১৯ মাস আগে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় পাঁচলাইশে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান আঁখি। অভিযোগ উঠেছে, যৌতুকের দাবিতে আইনজীবী স্বামীর নির্যাতনেই তাঁর এই অকাল মৃত্যু।

জানা গেছে, বাঁশখালী উপজেলার উত্তর জলদি গ্রামের মফিজুর রহমানের মেয়ে আঁখি। বেসরকারি সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির এলএলবি তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁদের পরিবার নগরীর বাকলিয়া ল্যান্ড মার্ক হাউজিং সোসাইটি এলাকায় থাকেন। আর আঁখি তাঁর স্বামী আনিসুলের সঙ্গে চান্দগাঁও শওকত আবাসিক এলাকায় থাকতেন। আনিসুল চট্টগ্রাম আদালতে আইন পেশায় নিয়োজিত।

চান্দগাঁও থানার ওসি মো. মঈনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই ঘটনায় আঁখির ভাই মিজানুর রহমান আজ সোমবার চান্দগাঁও থানায় স্বামী আনিসুল ইসলাম, তাঁর মা ফরিদা আক্তার (৫০) ও বোন হামিদা বেগমকে (৩৪) আসামি করে মামলা করেছেন। পুলিশ স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

আঁখিকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে স্বামী আনিসুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আঁখিকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে স্বামী আনিসুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে আঁখির ওপর শারীরিক নির্যাতন করতেন আনিসুল। দুই মাস আগে যৌতুক হিসেবে আঁখির কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে ঘরে আটকে রেখে মানসিক নির্যাতন করতেন। পরে আঁখি বিষয়টি পরিবারকে জানায়। গত ১৩ ডিসেম্বর স্বামী তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করেন। পেটে লাথি মেরে গুরুতর আহত করেন। ১৮ ডিসেম্বর পেটে ব্যথা অনুভব করলে আঁখিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বিষয়টি তাঁর পরিবারকে জানানো হয়।

আঁখির ভাই মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসকেরা পেটে অপারেশন করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু হাসপাতালটিতে অপারেশন করা সম্ভব নয় জানালে মাহমুদাকে চমেক (চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চমেকে তাঁর অপারেশন হয়েছিল। পরে সেখান থেকে তাঁকে রোববার বিকেল ৪টায় সার্জিস্কোপ হাসপাতালে ভর্তির দুই ঘণ্টা পর আঁখি মারা যান।’ মিজানুর দাবি করেন, মেডিকেল রিপোর্টে আঘাতজনিত কারণে মাহমুদার পেটের নাড়ি ছিঁড়ে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আঁখির হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে আজ সোমবার সকালে বিক্ষোভ করেছে সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।

সারাদেশ