বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যার সন্দেহভাজন মূল পরিকল্পনাকারী সৈয়দ জিয়াউল হক (মেজর জিয়া) এবং আকরাম হোসেনের ব্যাপারে তথ্য চেয়ে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। স্টেট ডিপার্টমেন্টের রিওয়ার্ডস ফর জাস্টিস কর্মসূচির এক টুইট বার্তায় এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। সেখানে মেজর জিয়া ও আকরামের ব্যাপারে কারও কাছে কোনো তথ্য থাকলে তা জানাতে একটি ফোন নম্বর দেয়া হয়। এতে বলা হয়, ওই হত্যা মামলায় বাংলাদেশের একটি আদালতে ছয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেয়া হয়েছে হামলায় তাদের ভূমিকার জন্য। ওই আসামিদের মধ্যে দুজন- সৈয়দ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া এবং আকরাম হোসেনের অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছিল এবং তারা এখনো পলাতক। ওই টুইট বার্তার সঙ্গে প্রচারিত এক পোস্টারে মেজর জিয়া, আকরাম হোসেন বা হামলার সঙ্গে জড়িত অন্যদের সম্পর্কেও কোনো তথ্য থাকলে তা শেয়ার করার অনুরোধ করে যুক্তরাষ্ট্র। তারা এ সংক্রান্ত সিগন্যাল, টেলিগ্রাম বা হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারও দিয়েছে। তাতে বলা হয়, সেক্ষেত্রে আপনিই পুরস্কার পেতে পারেন।
২০১৫ সালে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়। পোস্টারের শিরোনামে বলা হয়, ‘রিওয়ার্ডস ফর জাস্টিস ৫ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশে মার্কিন নাগরিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার তথ্যের জন্য।’ পোস্টারের নিচে বাম দিকের কোণায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নাম ও প্রতীক, ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি সার্ভিস ও রিওয়ার্ডস ফর জাস্টিসের নাম রয়েছে। রিওয়ার্ডস ফর জাস্টিস হচ্ছে সন্ত্রাস দমনের কাজে ভূমিকার জন্য পুরস্কার দেয়ার লক্ষ্যে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি কর্মসূচি। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ব্যক্তি বা সম্পত্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করা। এ কর্মসূচির অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন কোনো তথ্যের জন্য কাউকে পুরস্কৃত করতে পারেন, যার ফলে: আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা বা করার চেষ্টা, অথবা এর পরিকল্পনা বা সহায়তার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার বা দোষী সাব্যস্ত করা যায়। এরকম কোনো ঘটনা ঘটা ঠেকানো যায়, কোনো গুরুত্বপূর্ণ সন্ত্রাসী নেতাকে শনাক্ত বা তার অবস্থান চিহ্নিত করা যায়, অথবা সন্ত্রাসের জন্য অর্থায়নকে বিঘ্নিত করা যায়। এ পর্যন্ত আরএফআই ১০০-ও বেশি লোককে মোট ১৫ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ পুরস্কার হিসেবে দিয়েছে।
ফ্লাশব্যাক-
অভিজিৎ হত্যার রায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন: এদিকে চলতি বছরের ১৬ই ফেব্রুয়ারি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের এক রায়ে ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন- সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্তকৃত মেজর জিয়া, আনসার আল ইসলাম জঙ্গি সংগঠনের সদস্য আকরাম হোসেন, আবু সিদ্দিক সোহেল, মোজাম্মেল হোসেন ও আরাফাত রহমান। যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ পান শফিউর রহমান ফারাবী নামে এক আসামি। বিচারকার্য চলাকালে আলোচিত ওই মামলার ৬ আসামির মধ্যে ৪জন কারাগারে থাকলেও পরিকল্পনাকারী মেজর জিয়া ও আকরাম হোসেন পলাতক ছিলেন। তাদের অনুপস্থিতিতেই রায় হয়েছে। অভিজিৎ রায় সমমনা কয়েকজন লেখকের সাথে মুক্তমনা নামে লেখালেখির একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বিজ্ঞান, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, ধর্ম, নাস্তিকতাবাদ ইত্যাদি নিয়ে লেখালেখি করতেন। তার লেখার বিষয়বস্তুর জন্য ইসলামপন্থীদের দ্বারা বিশেষভাবে সমালোচিত ছিলেন অভিজিৎ রায়। অভিজিৎ রায়ের বইয়ের প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন একই বছর জঙ্গি হামলায় নিহত হন। চলতি বছরে দীপন হত্যার বিচার হয়েছে। এতে আট আসামির ফাঁসির আ