চট্টগ্রাম বন্দরে আপেলের ঘোষণা দিয়ে ২২ লাখ ১৯ হাজার শলাকা সিগারেট নিয়ে আসার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যদিয়ে ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি আটকে দিয়েছে কাস্টমস। বৃহস্পতিবার চালানটি জব্দ করা হয়।
কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন রিজভী বলেন, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আপেলের চালানে সিগারেট এনে ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকার সরকারি রাজস্ব দেওয়ার চেস্টা করেন আমদানিকারক। এ ঘটনায় দোষীদের কাস্টমস আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানাধীন স্টেশন রোডের মারহাবা ফ্রেস ফ্রুটস নামের একটি প্রতিষ্ঠান আরব আমিরাত থেকে আনা আপেল ঘোষণার চালানে সিগারেট নিয়ে আসেন। ৪০ ফুট লম্বা এক কনটেইনার পণ্যের চালানটি খালাসের লক্ষ্যে গত ২০ ডিসেম্বর কাস্টমস হাউসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে নগরের পূর্ব মাদারবাড়ীর ১৪৩ ডিটি রোডের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট জিমি এন্টারপ্রাইজ।
চালানটির এলসি ইস্যু করা হয়েছে খাতুনগঞ্জের ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে। পরে চালানটি বন্দরের ভেতরে নিয়ম অনুযায়ী এআইআর টিম পরীক্ষা শুরু করে। শতভাগ কায়িক পরীক্ষার লক্ষ্যে সব পণ্য প্যাকেট কেটে দেখা হয়।
এসময় কনটেইনারটিতে ১ হাজার ১২০টি ফ্রেশ আপেরের কার্টনের মধ্যে ৭৫৪টি কার্টনে আপেলের নিচে ইনার কার্টনে লুকানো বিভিন্ন ব্রান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬ লাখ ৯১ হাজার ৪৮০ শলাকা মন্ড ব্রান্ডের, ১৪ লাখ ৮ হাজার ৭২০ শলাকা ইজি ব্রান্ডের এবং ১ লাখ ১৮ হাজার ৮০০ শলাকা ওরিস ব্রান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়। এসব সিগারেটের আনুমানিক দাম ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
স্পতিবার শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কনটেইনার খুলে এই সিগারেট জব্দ করেন তারা। কনটেইনারের চালানে ১ হাজার ১২০টি কার্টন ছিল। এর মধ্যে ৭৫৪টি কার্টনের ওপরে আপেল রেখে নিচে বিদেশি ব্র্যান্ডের সিগারেটের প্যাকেট লুকানো ছিল।
চালানটি আমদানি করেছে চট্টগ্রামের রেলওয়ে মেন্স সুপার মার্কেটের মারহাবা ফ্রেশ ফ্রুটস। প্রতিষ্ঠানটি আমদানি নথিতে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আপেলের পরিবর্তে সিগারেট আমদানি করে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার মো. সালাহউদ্দিন রিজভী বলেন, অবৈধ উপায়ে সিগারেট এনে প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। এ ব্যাপারে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দেশে সিগারেট শর্ত সাপেক্ষে আমদানি করতে হয়। এটির ওপর আমদানি মূল্যের চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ শুল্ক আরোপ হয়। সে অনুযায়ী জব্দ হওয়া সিগারেটের আমদানি মূল্য দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের পোর্ট কন্ট্রোল ইউনিট ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় রপ্তানিকারক, রপ্তানিকারকের ওয়েবসাইট, প্রস্তুতকারক দেশ এবং আমদানিকারকের ব্যবসায়ের ধরন ও ঠিকানা, পণ্যের বর্ণনা বিশ্লেষণ করে এই চালান শনাক্ত করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।