ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে শিল্পকলার মহাপরিচালক পদে থেকে ব্যাপক অনীয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে নাট্য ব্যক্তিত্ব লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে। অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডের নামে ২৬ কোটি টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ জমা পড়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ে। লাকীর বিরুদ্ধে অনীয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠার পর তা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (২ জানুয়ারি) কমিশনের বৈঠকে অনুসন্ধান কর্মকর্তাও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যদিও দীর্ঘদিন ধরেই লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে শিল্পকলার ডিজির পদে থেকে অনীয়ম ও দুর্নীতি করার গুঞ্জন ছিলো।
দুদকের মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব খান তার কার্যালয়ে জানান, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে শিল্পকলার বিভিন্ন কর্মকান্ডের নামে অনীয়ম ও দুর্নীতির একটি অভিযোগ দুদক কমিশনে জমা পড়ে। অভিযোগ যাচাই বাচাই শেষে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। আজ (রোববার) কমিশনের বৈঠকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে উপ পরিচালক মো: ইব্রাহিমকে কে নিয়োগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিশন শীগ্রই কাজ শুরু করবে।
দুদকের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রায় এক যুগ ধরে শিল্পকলার মহা পরিচালকের দায়িত্বে আছেন লিয়াকত আলী লাকী। দায়িত্বে থেকে বিভিন্ন কর্মকান্ডের নামে খরচ দেখিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে ২৬ কোটি টাকা তুলে নেয়। অভিযোগ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে চুক্তিভিত্তিক একজন কর্মকর্তাকে সচিবের দায়িত্ব দিয়ে ২৬ কোটি টাকা উত্তোলন করে নিতে লিয়াকত আলী লাকীকে সহযোগিতা করে তার অনুসারী কর্মকর্তারা।
দুদকে আসা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৩০ জুন শিল্পকলা একাডেমির আগের সচিব নওশাদ হোসেন বদলি হলে ওই দিনই নতুন আদেশ জারি করে একাডেমির চুক্তিভিত্তিক পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিমকে সচিবের দায়িত্ব দেন লাকী। ৩০ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকালে প্রায় ২৬ কোটি টাকা বিভিন্ন কৌশলে উত্তোলন করা হয়। সরকারি বরাদ্দের অর্থ খরচ দেখাতেই এমন অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে বলে দুদকে দাখিল হওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে।
এছাড়া লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সঙ্গীত বিভাগের কক্ষে ব্যবহারের জন্য পর্দা, ক্রোকারিজ ও ফার্নিচার না কিনে ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ বরাদ্দ, ডান্স এগেইনস্ট করোনা কর্মসূচির আওতায় নৃত্যদলের সম্মানী, হার্ডডিস্ক ক্রয়, ডকুমেন্টেশন, প্রপস-কস্টিউম, প্রচার ও বিবিধ ব্যয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের বরাদ্দের অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধান সংশ্লিস্ট দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি অনুসন্ধান করে তা প্রতিবেদন আকারে কমিশনে উত্থাপন করা হবে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দুর্নীতির সত্যতা পেলে কমিশনের অনুমোদনের ভিত্তিতে এ সংক্রান্তে মামলা দায়েরের পর বিস্তারিত তদন্ত করা হবে।
আজই অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে উপ পরিচালক ইব্রাহিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে আজ পর্যন্ত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ফাইল অনুসন্ধান কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়নি। ফাইল হাতে পাওয়ার পর অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।