পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, দেশে একটা লোকও গুম কিংবা খুনের শিকার হোক সরকার তা চায় না। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স শব্দই তো নেই। আমরা চাই না, কাউকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা চাই প্রত্যেকের আইনের মাধ্যমে বিচার হবে।’
আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘সেন্টার ফর নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশি’ আয়োজিত ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সিরিজের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
দেশে মাঝেমধ্যে কিছু নিখোঁজের ঘটনা ঘটে। সেগুলোর প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মাঝেমাঝে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ এসব করে। পৃথিবীর সব দেশেই এমন হয়, কম-বেশি। আমাদের এখানে অন্য দেশের তুলনায় কম। যেহেতু আমরা পলিটিক্যালি-স্ট্রাটিজিক্যালি খুব ভালো অবস্থানে আছি, আমাদের আশপাশের বড় বড় দেশ এবং আমাদের সমুদ্র অ্যাকসেসের জন্য অনেক বেশি উদ্বিগ্ন, সেজন্য এখন আমরা সবার চক্ষুশূল। আসল উদ্দেশ্য কিন্তু হিউম্যান রাইটস না, গুম-খুনও না। আসল উদ্দেশ্য এসব চাপ দিয়ে কিছু ফায়দা সংগ্রহ করা যায় কিনা।’
মন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি গুম হওয়া ব্যক্তিদের তালিকা দিয়েছিল। তালিকাভুক্তদের মধ্যে অনেকেরই ভূমধ্যসাগরে সলিল সমাধি হয়েছে। বাংলাদেশের কোনও একটি প্রতিষ্ঠানের কারণেই তারা (জাতিসংঘের কমিটি) রিপোর্ট করেছে, তারা নিজেরা গবেষণা করেনি। তালিকা দিয়েছে তাদের কাউকেই আমরা চিনি না, দুই-একজনকে চেনা গেছে। তাদের তথ্য নিতে পুলিশ পরিবারের কাছে দুই-একবার গেছে। পুলিশের ধারণা, দিনের বেলা তারা থাকবে না, তাই রাতের বেলা গেছে। তখন তারা অভিযোগ করেছে যে, তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। পুলিশ জানতে চায়, তাদের পরিবারের সদস্য কবে, কোথায়, কেন গেছেন, কিছু জানে কিনা। কারণ অনেকেই আবার ফেরত চলে আসে। দুই একদিন এরকম করার পর তারা অভিযোগ করলেন।’
এ বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের একটি মিটিংয়ে রাখার জন্য বলেছি, সেখানে সংবাদকর্মীরাও থাকবেন। ওনারা তখন বলবেন যে তাদের পরিবারের সদস্যরা কবে কোথায় কিভাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কিংবা ফেরত এসেছে কিনা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যেমন আমরা অনেক দিন ধরে জানি, হারিছ সাহেব (বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী) গুম হয়ে গিয়েছিলেন। এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স। এখন দেখি না, উনি দেশেই ছিলেন এবং দেশেই নাকি মারা গেছেন। তার মেয়ে বলেছে। আমরা এক সময় দেখলাম, একজন নেতা তিনি দেশে নেই, তারপর ইন্ডিয়ার হোটেল ইন্ডিয়ানরা তাকে ধরলো। ওই সব গুম-খুন বলা হয়, কতটুকু সত্য তা আমরা ঠিক জানি না। একটা লোক গুম হোক, একটা লোক খুন হোক আমরা চাই না।’ তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই এগুলো অপপ্রচার।’