নিজস্ব প্রতিবেদক
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাসেল শাহরিয়ার। দুর্নীতির মামলায় গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন কমিশনের সচিব মাহবুব হোসেন।
আজ বুধবার সাংবাদিকদের সচিব জানান, সম্প্রতি ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ১৩০০ কোটি আত্মসাতের ঘটনার অনুসন্ধান শেষ হয়। প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠানটির ৫২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযাগে ১৩টি মামলা রুজুর অনুমোদন দেয় দুদক।
ভূয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান অ্যান্ড বি ট্রেডিংয়ের নামে জাল রেকর্ডপত্র প্রস্তুত এবং তা সঠিক হিসেবে ব্যবহার করে অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানটি। শুভ্রা রানী ঘোষ নামে এক নারীকে প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে দেখিয়ে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল পি কে হালদারসহ প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক ও এমডি রাসেল শাহরিয়ারসহ ১৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজুর অনুমোদন দেয় দুদক। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে রাসেল শাহরিয়ারকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, রাসেল শাহরিয়ার ফাস ফাইনান্সে এমডি থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের একক স্বাক্ষরে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ঋণ প্রস্তাব বোর্ডে উপস্থাপন করেন। ঋণ অনুমাদন করে তিনি এসব অর্থ পি কে হালদারের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানিতে হস্তান্তর করেন। এসব বিষয়ে তথ্য উদ্ধারে তাকে রিমান্ডে নেয়া হবে। আজ বুধবার বাকি ১২ মামলা রুজু করা হবে। এসব মামলায় ৪৭৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের অনুমোদন দেয়া মামলাসমূহের বর্ণনায় ১৩ মামলায় সর্বমোট ৫২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে অ্যান্ড বি ট্রেডিংয়ের কাছে ৪৪ কোটি টাকা, ন্যাচার এন্টারপ্রাইজ- ৪৫ কোটি, নিউট্রিক্যাল- ৩০ কোটি, এস এ এন্টারপ্রাইজ- ৪২ কোটি, সুখাদা- ৪০ কোটি, এমটিবি মেরিন- ৪০ কোটি, হাল ইন্টারন্যাশনাল- ৪৫ কোটি, স্বন্দীপ কর্পোরেশন- ৪০ কোটি, দিয়া শিপিং- ৪৪ কোটি, মুন এন্টারপ্রাইজ- ৩৫ কোটি, বর্ণ- ৩৮ কোটি, আরবি- ৪০ কোটি এবং মেরিন ট্রাস্ট- ৪০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
এরইমধ্যে ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান, বোর্ড সদস্য, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৪ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিদেশ গমনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন দুদক সচিব মাহবুব হোসেন।