অনলাইন জুয়ার এক চক্রই পাচার করেছে ২০ কোটি টাকা

অনলাইন জুয়ার এক চক্রই পাচার করেছে ২০ কোটি টাকা

অনলাইন জুয়া পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত আন্তর্জাতিক চক্রের দুই এজেন্টসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত এক বছরে চক্রটি অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে পাওয়া ২০-৩০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও ভারত থেকে এসব জুয়ার সাইট পরিচালিত হয় বলেও জানিয়েছে ডিবি।

গত ১৯ ফেব্রয়ারি রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম ও অর্গানাইজ ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- তরিকুল ইসলাম ওরফে বাবু , রানা হামিদ ও সুমন মিয়া। গ্রেপ্ততারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, নগদ ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, চারটি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন, পাঁচটি সিমকার্ড জব্দ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেপ্তার তিনজন ও পলাতক সাথী আক্তারসহ আরও প্রায় ৫০/৬০ জন ইলেক্ট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইনে জুয়া (বেটিং) খেলার সাইট পরিচালনা করছিল। সাইট থেকে পাওয়া অর্থে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে জমি ও গাড়িসহ প্রচুর অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছে। তারা মোবাইল ব্যাংকিং বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অবৈধ অর্থের লেনদেন (ই-ট্রানজেকশন) করে আসছিল।

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা মাজা পিবিইউ ও বেটবাজ ৩৬৫ নামের দুটি বেটিং ওয়েবসাইটের বাংলাদেশের মাস্টার এজেন্ট। সাইটগুলোর মাস্টার এজেন্ট হিসেবে দেশের বাইরে থাকা সুপার এজেন্টের কাছ থেকে প্রতিটি পিবিইউ (ভার্চুয়াল কারেন্সি) ৬০ টাকায় কেনে তারা। পরে লোকাল এজেন্টের কাছে তা ১০০ টাকা এবং জুয়াড়িদের কাছে ১৫০ টাকায় বিক্রি করে। তারা ৮/১০ লাখ টাকার বিনিময়ে লোকাল এজেন্ট নিয়োগ করে, যা পিবিইউ কারেন্সিতে দেওয়া হয়।

তাদের কোনো বৈধ আয়ের উৎস নেই জানিয়ে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, সিয়াম আহমেদ ও আলী খান নামে দু’টি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করত এজেন্টরা। গ্রেপ্তারকৃতদের প্রকাশ্যে কোনো আয়ের উৎস নেই। অথচ প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, তাদের জব্দকৃত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোয় ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া তাদের ১৩ টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও ২৩ টি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে।

ডিবি জানায়, সাইটগুলোতে ক্রিকেট খেলায় নির্দিষ্ট ওভার বা বলে কত রান হবে অথবা নির্দিষ্ট ম্যাচটিতে কোন দল জিতবে তার উপর ১:৩ অনুপাতে বেটিং করা হয়। সাধারণ ব্যবহারকারীরা টার্গেটকৃত রান বা তার নির্দিষ্ট দল জিতলে বেটিং পিবিইউ-এর তিনগুন ফেরত পান। এভাবেই বেটিং/অনলাইন জুয়া পরিচালিত হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় আসামিদের তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলেও জানায় ডিবি।

অর্থ বাণিজ্য তথ্য প্রুযুক্তি