‘মুচলেকা দিয়ে’ দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন সাকিব

‘মুচলেকা দিয়ে’ দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন সাকিব

গত ক’দিন ধরেই খবরের শিরোনামে সাকিব আল হাসান। কারণটা ক্রিকেটীয় হলেও দেশসেরা অলরাউন্ডার ছিলেন ‘অক্রিকেটার সূলভ’ আচরণের কারণে। একদিন আগেও যেখানে ক্রিকেট থেকেই দূরে থাকতে চেয়েছিলেন, তার চাওয়ার সম্মানে বোর্ডও তাকে ছুটি দিয়েছিল দু’মাসের, সেই সাকিবই এখন দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন সবফরম্যাটের ম্যাচ খেলতে!
হুট করেই যেন বদলে গেল পাশার দান। কদিন আগেই দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে খেলবে না বলে দেশ ছেড়ে দুবাই গিয়েছিলেন সাকিব। তবে দেশে ফিরে গতকাল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন এ অলরাউন্ডার। সাংবাদিকদের বিষয়টি নিজেই জানিয়েছেন দেশ সেরা এ তারকা। টেস্ট সংস্করণে না খেলার বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে সব সংস্করণেই খেলবেন সাকিব। আজ রাতেই দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ছেন তিনি। এরমধ্যেই তিন ধাপে দলের সদস্যরা বাংলাদেশ ছেড়েছেন এ সিরিজের উদ্দেশ্যে।
সবমিলিয়ে চরম নাটকীয়তাই উপহার দিয়ে সিদ্ধান্তে পরিবর্তন করলেন সাকিব। এদিন বোর্ড সভাপতির সঙ্গে সভা শেষে এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘যেটা হচ্ছে পাপন ভাইয়ের সঙ্গে আগেও কথা হয়েছে, গতপরশু (বৃহস্পতিবার), কালকে (শুক্রবার) এবং আজকেও (গতকাল)। আমরা পুরো বছরের পরিকল্পনাটা করতে পেরেছি। যেহেতু আমি তিন সংস্করণেই খেলছি, তাই আমি তিনটা সংস্করণেই থাকব সবসময়।’ তিন সংস্করণে খেলার ব্যাপারটি নিশ্চিত করলেও মাঝেমধ্যেই বিশ্রাম নিবেন সাকিব। তবে বিষয়টি বিসিবির কোর্টেই ছেড়ে দিয়েছেন তিনি, ‘বোর্ড অবশ্যই সিদ্ধান্ত নিবে যে কোন সময়ে আমাকে বিশ্রাম দেওয়া জরুরী বা দেওয়া দরকার। এটা এই দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ থেকেই। তাই আমি দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজেও আছি।’ অনেকটা ‘মুচলেকা’ দিয়েই এই নাটকের পরিসমাপ্তি ঘটাতে হয়েছে সাকিবকে।
সাকিবের দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়া না যাওয়া নিয়ে অবশ্য পানি কম ঘোলা হয়নি। পাপনও বলছেন একই কথা, ‘সাকিব আমাদের সঙ্গে প্রথম কথা যেটা সে আমাদের কাছে ছুটি চেয়েছিল। পরে তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে সে বলেছিল সে খেলবে। পরে আপনাদের সঙ্গে এবং জালাল ভাইয়ের সঙ্গে একটা কথা হয় যে, সে শারীরিক ও মানসিকভাবে সে ফিট না। ওখানে গিয়ে আমার সঙ্গে কথা যে আমার সঙ্গে এসে জানাবে। পরে জানায় যে সে খেলবে না। জালাল ভাইও জানিয়ে দিল। আমরাও একটা ছুটি দিয়ে দিলাম।’ এরপর দেশে ফিরে পাপনের বাসায় গিয়ে নিজের নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানান সাকিব। পাপনের ভাষায়, ‘পরশুদিন (বৃহস্পতিবার) দেশে এসে আমাকে জানাল ও একটু মানসিকভাবে ডিস্টার্ব। এটা আমাদের সবসময়ই হয় কোনো না কোনো সময়। এইজন্য সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে। আমার সঙ্গে আলোচনা শেষে সে জানিয়েছে সে সব সংস্করণে খেলতে ইচ্ছুক এবং এটা এই দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ থেকেই।’
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগ ও আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত সিরিজে তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। সিরিজ শুরু হবে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে। ১৮ মার্চ থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এ লড়াই। এরপর আগামী ৩১ মার্চ থেকে শুরু হবে দুই দলের প্রথম টেস্ট ম্যাচ। ৮ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচ।

খেলাধূলা