কী হবে রোজায় জনভোগান্তির

কী হবে রোজায় জনভোগান্তির

আসন্ন রোজায় জনভোগান্তি কমাতে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে ও কারসাজি ঠেকাতে বাজার মনিটরিং জোরদার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে নতুন করে কোনো পণ্যের দাম যাতে না বাড়ে সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব আপাতত বিবেচনায় নেবে না সরকার। রোজার আগে আর কোনো সেবার দামও বাড়াবে না।

দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এরই মধ্যে বাণিজ্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ ও ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ সূত্র জানান, রোজার আগে দরিদ্র মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে অর্থ বিভাগ ৩০ লাখ দরিদ্র পরিবারকে চিহ্নিত করেছে। এসব পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করা হবে। যারা চলমান করোনাভাইরাস মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যাদের আয় কমে গেছে এমন পরিবারগুলোকে বাছাই করা হয়েছে। পাশাপাশি নগদ সহায়তাও দেওয়া হতে পারে। রাজধানী ঢাকা, বিভাগীয় শহর বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট- এ আট বিভাগ থেকে পরিবারগুলোকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে সারা দেশেই জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে চাল, চিনি, ডাল, খেজুর, তেল, পিঁয়াজসহ নিত্যপণ্য সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওপেন মার্কেট সেলের (ওএমএস) আওতাও বাড়ানো হচ্ছে। এ কর্মসূচির আওতায় সারা দেশের ১ কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বাজারে এখন ৫০ টাকার নিচে কোনো চাল পাওয়া যায় না। মোটা চালের চাহিদা বেশি হওয়ায় দামও বেড়েছে। শুধু চাল নয়, তেল, চিনি, পিঁয়াজ, মাছ-মাংসসহ সব ধরনের সবজির দাম বাড়ছে অব্যাহতভাবে।

দায়িত্বশীল সূত্র জানান, এ অবস্থায় অন্তত চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে কাজ করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। আর পুরো বাজার স্থিতিশীল করতে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এজন্য রোজার আগেই জেলায় জেলায় থাকা বাজার মনিটরিং টিমগুলোকে সক্রিয় করা হচ্ছে। এ ছাড়া সারা দেশে চলমান ওএমএস কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি সরকারিভাবে বিভিন্ন প্যাকেজ কর্মসূচি হতে নেওয়া হয়েছে। খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম জানান, এবার রমজানে ১ কোটি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। কোনোভাবেই নিম্ন আয়ের মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য মন্ত্রণালয় আরও কিছু প্যাকেজ কর্মসূচি রোজার মাসের আগেই শুরু করবে। গত বছর প্রধানমন্ত্রী আড়াই হাজার টাকা করে দিয়েছিলেন ৩৫ লাখ পরিবারকে, সেখানে এবার ১ কোটি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। কোনোভাবেই যেন নিম্ন আয়ের মানুষ কষ্ট না পায় সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদিকে করোনা মহামারিতে মানুষের আয় কমেছে, অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষের। বিশেষ করে মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ খুবই অসহায়ত্বের মধ্যে সময় পার করছে। কেননা গত দু-তিন বছরে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়তে বাড়তে অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। অথচ এ সময়ই অধিকাংশ মানুষের আয় কমেছে।

খাদ্য সচিব নাজমানারা খানুম বলেন, ‘২০ লাখ টনের বেশি খাদ্যশস্য মজুদ আছে। এর পরও মিলাররা আমাদের কাছে চাল বিক্রি করতে চাচ্ছেন। তার মানে কী? মোটা চালের দাম আর বাড়বে না। এটা কমেই যাবে।

অর্থ বাণিজ্য