আগামী সোমবার প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন দেশের সর্ববৃহৎ পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্র

আগামী সোমবার প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন দেশের সর্ববৃহৎ পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্র

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী ॥ আগামী সোমবার, ২১ মার্চ দেশের বৃহৎ ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখানকার মানুষ মুখিয়ে আছেন প্রধানন্ত্রীর সফরের দিকে। জাতির পিতার যোগ্য উত্তরসূরি দেশের প্রধানমন্ত্রী মহীয়সী নারী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে ভুলিয়ে দিয়েছেন বিদ্যুত বিভ্রাট কী। জাতির পিতার দেশ এগিয়ে নেয়ার স্বপ্নের সেই মহান দায়িত্ব নিয়ে দুর্বার গতিতে উন্নয়নের মহাসড়কে দেশ এগিয়ে চলছে। নেতৃত্ব দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ভুলিয়ে দিয়েছেন বিদ্যুতের লোডশেডিং শব্দটি। শিল্প উদ্যোক্তারা এখন আর ভোগেন না বিদ্যুত না পাওয়ার শঙ্কায়। আর বিদ্যুত বিভাগের অভাবনীয় সাফল্যের দূয়ার খুলে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ হাতে। দেশের বৃহৎ এই বিদ্যুত প্লান্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

দক্ষিণের কলাপাড়া উপজেলার রাবনাবাদ পাড়ের এই জনপদ আলোকিত হবে পায়রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে। ২০২০ সালের ১৫ মে এই পাওয়ার প্লান্টের প্রথম ইউনিট চালু করা হয়েছে। শুরু হয় উৎপাদন। জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ হচ্ছে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত। আর দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদন শুরু করে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। এখন পুরো ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত প্লান্টটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) বাংলাদেশ চায়না যৌথ বিনিয়োগে নির্মিত এই বিদ্যুত প্রকল্পটি এখন সম্পুর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুত সরবরাহের জন্য। ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকিউরমেন্ট এন্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (ইপিসি) এই বিদ্যুত কেন্দ্রের উন্নয়ন কাজ করেছে। যৌথভাবে যন্ত্রপাতি স্থাপন করেছে চায়না ন্যাশনাল এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিইসিসি) এবং নর্থইস্ট (নম্বর-১) ইলেকট্রিক পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নিশানবাড়িয়া ও মধুপাড়া মৌজায় ১০০২ একর জমি অধিগ্রহণ করে সেখানে ৯৮২ দশমিক ৭৭ একর জমির ওপরে এই বিদ্যুত প্লান্টটি নির্মিত হয়েছে। এখানে জমিদাতা বাড়িঘর হারা ১৩৫ পরিবারকে আগেই পুনর্বাসন করা হয়েছে। করে দেয়া হয়েছে আধুনিক সুবিধা সংবলিত পল্লী ‘স্বপ্নের ঠিকানা’।

পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজোয়ান ইকবাল খান জানান, ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শিজিনপিং পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদুত কেন্দ্রের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড (বিসিপিসিএল) কর্তৃপক্ষ প্রথম পর্যায়ে ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি ইউনিটের নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করেছে। যার একটি ২০২০ সালের ১৫মে থেকে জাতীয় গ্রিডে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ করছে। আর দ্বিতীয় ইউনিটটি ৮ ডিসেম্বর নির্মাণ কাজ শেষ করে উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

দুই দেশের যৌথ বিনিয়োগে পরিচালিত এই প্রকল্পে এ পর্যন্ত দুই দশমিক ৪৮বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে, যার মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক থেকে এক দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নেয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী বিসিপিসিএল নির্ধারিত সময় বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শেষ করেছে। বিদ্যুত কেন্দ্রের উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এম খোরশেদুল আলম বলেছেন, ইতোমধ্যে কেন্দ্রটি গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। কেন্দ্রটি সফলভাবে উৎপাদন শুরু করায় দেশে নতুন এক ইতিহাস সূচিত হয়েছে। তিনি বলেন, সব থেকে বড় এই বিদ্যুত কেন্দ্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবারে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। পায়রা বিদ্যুতকেন্দ্রসহ আশপাশের গ্রামের মানুষ অপেক্ষা করছেন প্রধানমন্ত্রীর আগমনের অপেক্ষায়। বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ।

সারাদেশ