আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে তেলের দাম বেড়েছে বলে স্বীকার করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি। তবে তিনি এ কথাও বলেছেন, মন্ত্রণালয় থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার কারণে ভোজ্য তেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল ও সহনীয় অবস্থায় রয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি, চাহিদা নির্ণয়, মজুদ পরিস্থিতি আরো অনেক বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এছাড়া দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও পূর্বাভাস সেল’ এটি মনিটরিং করছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ২৮টি মনিটরিং টিম বাজার দাম পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। টিসিবির পক্ষ থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে ৩০০০ ডিলারের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে ট্রাক সেল চলমান রয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও জানান, আগামী রমজান উপলক্ষে সারা দেশের এক কোটি নিম্ম আয়ের মানুষকে রমজান শুরুর আগে গত ২০ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত নিত্যপণ্য বিক্রি করা হবে এবং দ্বিতীয় বার ৩ এপ্রিল থেকে আবারো টিসিবির তরফ থেকে নিত্যপণ্য বিক্রি করা হবে।
টিপু মুন্সি বলেন, বাংলাদেশের ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪৫৩৬ কোটি ৭১৯ লাখ ডলার। এ সময়কালে দেশের মোট বাণিজ্য ঘাটতির পরিমান ১৬২৪ কোটি ২০১ লাখ ডলার।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল। যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। ২০১০-২০১১ অর্থ বছরে ভারতে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫১ কোটি ২৫ লাখ ডলার, যা ২০২০-২০২১ সালে বেড়ে পেয়ে দাড়িয়েছে ১২৭ কোটি ৯৬৭ লাখ ডলার।
টিপু মুন্সি বলেন, বর্তমান সরকার বাণিজ্য সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন দেশেল সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ও অগ্রাধিকার বাণিজ্য স্বাক্ষরের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চীনের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আট হাজার ২৫৬টি পণ্যের ওপর শুল্কমুক্ত প্রবেশাধীকার সুবিধা পাওয়া যাবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্বের ২০টি দেশে বাংলাদেশের ২৩টি বাণিজ্য মিশন রয়েছে। যেগুলো হলো- অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, চীন (বেনজিং), চীন (কুনমিং), ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত (দিল্লি ও কলকাতা), ইরান, জাপান, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, স্পেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র (ওয়াশিংটন ও লসঅ্যাঞ্জেলস), যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব। তবে এ দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটির পরিমাণ ৭৬৪ কোটি ৭৬০ লাখ ডলার বলে জানান তিনি।