নিজস্ব প্রতিবেদক
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে ভারতীয় শাড়ি বিক্রির নামে প্রতারণা করছে স্বামী-স্ত্রী। এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর অর্গানাইজড ক্রাইম ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ বিভাগ।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসা দম্পতিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআই’র ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সাগর সরকার।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মোসা. জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে কাজল ও এস এম খায়রুজ্জামান।
এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত সাতটি মোবাইল ফোন, ফেসবুক পেজ ও বিকাশ একাউন্টে থাকা প্রতারণার মাধ্যমে আদায় করা অর্থ জব্দ করা হয়েছে।
এএসপি সাগর সরকার বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাবিহা শাড়ি হাউজ নামে একটি পেইজ খুলে অল্প দামে ভারতীয় শাড়ি বিক্রির নামে প্রতারণা করে আসছিল চক্রটি। এই চক্রের মূলহোতা এই দম্পতি। তারা অভিনব কৌশলে প্রতারণা করে আসিছলো। সম্প্রতি এক নারীর কাছ থেকে শাড়ি বিক্রির নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় একটি মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
যে ভাবে প্রতারণা করা হতো- দীর্ঘদিন ধরে কোনো শাড়ি সরবরাহ না করেই মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে আসছিলো এই দম্পতি। জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে কাজল পেশায় গৃহিণী। তিনি বাসায় বসে অনলাইনে বসে অর্ডার নেন। অর্ডার গ্রহণের সময়ে শাড়ির মূল্যের একটি অংশ অগ্রিম নিয়ে নেন। এরপর তার স্বামী পেশায় গাড়ি চালক খায়রুজ্জামান ডেলিভারিম্যান সেঁজে শাড়ি অর্ডারদাতাকে ফোন করে বলতেন আমি আপনার বাসার কাছে আছি। শাড়ি নিয়ে এসেছি। আপনি পেইজে দেওয়া নম্বরে ফোন করে প্রোডাক্টের কোড নম্বরটা নিয়ে আমাকে জানান। গ্রাহক পেইজের নম্বরে ফোন করলে কাজল ফোন ধরে বলতো অর্ডারের বকেয়া টাকা পরিশোধ করুন কোড নম্বর পেয়ে যাবেন। গ্রাহক তখন সরল বিশ্বাসে পুরো টাকা পরিশোধ করতো। এরপরই শুরু হতো গ্রাহকের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার আর ফেসবুকে ব্লক করে দিত। এভাবেই অসংখ্য সহজ সরল অনলাইন ক্রেতাদের ঠকিয়ে আসছিল তারা।
এএসপি সাগর আরও জানান, এই দম্পতি গত পাঁচ মাস ধরে প্রতারণা করে আসছে। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে। এই দম্পতি শুধু মাত্র রমজানের শুরু থেকে প্রতিদিন অন্তত ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে আসছিলো। কিন্তু তাদের কাছে কোনো ধরনের শাড়ি বা অন্য কোনো পণ্য ছিলো না। কাজলের স্বামী নিউ মার্কেট থানায় অপর একটি প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিল। এই দম্পতির চারটি সন্তান রয়েছে। তারা এই শিশুদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে গ্রেফতার এড়াতে এদেরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করত।