নিত্যপণ্যের বাজার আবার বেসামাল

নিত্যপণ্যের বাজার আবার বেসামাল

তেল নিয়ে অস্থিরতার মধ্যেই এবার দাম বাড়ার প্রতিযোগিতায় আরও কিছু ভোগ্যপণ্য। দেশের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজ, রসুন, আদা থেকে শুরু করে ছোলা, ডালসহ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে কেজিতে ১৮ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে আমদানির অনুমতি বন্ধের সিদ্ধান্তকে দায়ী করা হলেও বাকিগুলোর জন্য দেখানো হচ্ছে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত। তাদের দাবি, আগামী কোরবানি ঈদে বাজারে পেঁয়াজ রসুনের কোনো সংকট হবে না।

চট্টগ্রামের বৃহত্তর ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের আগে খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইয়ের আড়তগুলোতে ভালো মানের প্রতিকেজি পেঁয়াজ ২৪-২৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রসুন বিক্রি হয়েছে ৯০-৯৫ টাকা কেজি দরে। মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকা কেজিতে। অন্যদিকে, রসুন বিক্রি হচ্ছে ১১৪-১১৫ টাকা কেজিতে। তবে পেঁয়াজ ও রসুনের তুলনায় আদার দাম কম আছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের বাজার হামিদুল্লাহ মিঞা মার্কেট কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, আমদানি অনুমতির (আইপি) মেয়াদ শেষ হওয়ায় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। সরকার আমদানির অনুমতি দিচ্ছে না। দেশের বাইরে থেকে পেঁয়াজ না আসায় খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের সরবরাহ কম। তাই দাম বাড়ছে। আমদানি বন্ধ থাকলে দাম আরও বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, খাতুনগঞ্জে আজ ভারতীয় পেঁয়াজ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায়। আর দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকায়। দ্রুত পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।

খাতুনগঞ্জের কমিশন এজেন্ট মেসার্স আলীম ট্রেডার্সের মালিক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, পেঁয়াজের দাম ঈদের পর কেজিপ্রতি ১৮ টাকা বেড়েছে। ভারতীয় পেঁয়াজ আজ মানভেদে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগের দিন সেই পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ২৭ থেকে ২৮ টাকায়। বাজারে পণ্যের সরবরাহ কম, তাই দাম বেড়েছে। এছাড়া আইপি বন্ধ থাকার কারণেও দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মিয়ানমারের কোনো পেঁয়াজ নেই বলেও জানান তিনি।

এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, খাতুনগঞ্জে আজ চীন থেকে আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১১৪ থেকে ১১৫ টাকায়। ঈদের আগে ছিল ৯০ থেকে ৯২ টাকা। রসুনের সরবরাহ বাজারে কম দাবি করে তিনি বলেন, ঈদের বন্ধের কারণে রসুন আমদানি কম হয়েছে, জাহাজ ভিড়তে পারেনি, তাই দাম বেড়েছে।

এদিকে, পেঁয়াজ-রসুন ব্যবসায় কোনো সিন্ডিকেট নেই বলে দাবি করেন খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ-রসুনের আড়তদার ব্যবসায়ী এস এন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আলী হোসেন খোকন। তিনি বলেন, পেঁয়াজ রসুন পচনশীল পণ্য। কেউ দাম বাড়ানোর জন্য পেঁয়াজ রসুন স্টক করতে পারে না। এক বস্তা পেঁয়াজ গুদামে রাখা হলে এক দিনেই ৫০০ গ্রাম ওজন কমে যায়। বেশিদিন রাখলে পচনও ধরে। যে কারণে সিন্ডিকেট মজুতদারি করে দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। গত সপ্তাহে দাম কিছুটা বাড়লেও শনিবার থেকে দাম কমতির দিকে রয়েছে।

জাতীয় সারাদেশ